দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত কয়েকদিন ধরেই বেআইনি বালি খাদান, খাসজমি দখল করে ব্যবসা ও বেআইনি ইটভাটায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রশাসন। কিন্তু বুধবার রাতে খড়্গপুর গ্রামীণ থানা এলাকায় বালি ও মোরাম ভর্তি লরিতে তল্লাশি করতে গিয়েই বাঁধল বিপত্তি। মোরাম মাফিয়াদের বেধড়ক মারে জখম হলেন রাজস্ব আধিকারিক শেখ ইয়াসিন। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জখম হয়েছেন আরও সাতজন।
ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক প্রবীর কুমার রায় অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় মোরাম মাফিয়া শেখ মুসলেমের ভাই ও আরও ৫০-৬০জন মিলে সরকারি আধিকারিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। চলে বেধড়ক মার। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার পুলিশ।
বুধবার রাতে যে ঘটনা ঘটেছে তা সাদাতপুর ফাঁড়ির সামনেই। ফলে প্রশ্ন উঠছে, একটি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে যদি সরকারি আধিকারিকদের এই পরিণতি হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতারে করতে পারেনি পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক বিজেপি নেতা বলেন, পুলিশের মদতেই চলে এই খাদানগুলি। আর তৃণমূল নেতারা মাসোহারা কাটমানি নেয়। শাসক দলের মদতেই লুঠ চলছে বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। যদিও তৃণমূলের বক্তব্য, প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে। সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দিলে তার জন্য যা আইন আছে সেই মতোই ব্যবস্থা হবে।
স্থানীয় সাহাচকে একটি মোরাম খাদান রয়েছে। সেখান থেকেই লরি বোঝাই করে মোরাম পাচার হচ্ছিল বলে খবর। ওই মোরাম খাদান সমাজ বিরোধীদের আখড়া বলেই বক্তব্য স্থানীয়দের। এর আগে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদেরও মার খেতে হয়েছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন খোদ রাজস্ব আধিকারিক।
সপ্তাহ দেড়েক আগে বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভায় ভূমি রাজস্ব দফতরের বিরুদ্ধে তীব্রতা ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “ল্যান্ড ডিপার্টমেন্টে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে। ওই ঘুঘুর বাসা ভাঙতে হবে। দরকার হলে অপরাধ দমন শাখাকে নামিয়ে দাও।” অনেকের মতে, তারপরই জেলায় জেলায় ভূমি রাজস্ব আধিকারিকদের নড়াচড়া বেড়ে গেছে। কদিন আগে দাঁতনে একাধিক বেআইনি ইটভাটায় তল্লাশি অভিযান চলেছে। এবার খড়্গপুরে ঝরল রক্ত।