বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন ক্রমশই শিকড় গাড়ার চেষ্টা করছে বাংলায়। আগেই সাবধান করেছিল ভারতের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি খবর মিলেছে, আগামী মঙ্গলবার প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি রেল স্টেশনে হামলা চালানোর ছক কষছে জামাতুল মুজাহিদিন তথা জেএমবি জঙ্গি সংগঠন। এই পাঁচ স্টেশনগুলির মধ্যে রয়েছে মালদা, জঙ্গিপুর, জিয়াগঞ্জ, আজিমগঞ্জ ও নিউ ফারাক্কা।
রাজ্যের এই পাঁচ রেল স্টেশনে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে। স্টেশন খালি করে তল্লাশি চলছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর এসেছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে মালদা ডিভিশনের ওই পাঁচ স্টেশনে বড়সড় সন্ত্রাসবাদী হামলা চালাতে পারে জেএমবি জঙ্গিরা। খবর পেয়েই তৎপর হয়েছেন রেল আধিকারিকরা। স্টেশনে স্টেশনে তল্লাশি শুরু করেছে জিআরপি ও আরপিএফ। খবর দেওয়া হয়েছে অ্যান্টি টেরর স্কোয়াডকে। স্টেশনে ঢোকার মুখে কড়া নজরদারি চলছে। নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, নাশকতা রোখার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। স্টেশনের আশপাশেও কড়া সতর্কতা জারি হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে পৌঁছেছেন রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
ভারতে গত কয়েক বছর ধরেই জাল বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে জামাতুল মুজাহিদিন জঙ্গি সংগঠন। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা তথা এনআইএ-র কড়া পদক্ষেপের জেরে জেএমবি-র নাশকতার চেষ্টা অনেকটাই রুখে দেওয়া গেছে। তবে বাংলায় নতুন করে থাবা বসাতে মরিয়া বাংলাদেশের এই জেহাদি সংগঠন। জঙ্গিদের নজরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, কেরল ও বিহারের মতো রাজ্যগুলিও।
রাজ্যের অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড (এটিএস) এবং স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) জানিয়েছে, খাগড়াগড়-কাণ্ড এবং বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের ঘটনার পর জেএমবি কীভাবে ভারতে জাল বিস্তারের চেষ্টা করছে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। আল কায়দার ভারতীয় শাখার সঙ্গে ডেএমবি-র ঘনিষ্ঠতার খবরও সামনে এসেছে। রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি, এনআইএ-র অভিযানে একের পর এক জঙ্গি ধরা পড়ছে।
গত বছর জেএমবি জঙ্গি গোষ্ঠীর অন্যতম শীর্ষ নেতা মহম্মদ ইজাজ ওরফে ইজাজ আহমেদকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। ২০০৮ সাল থেকে ইজাজ জেএমবির সদস্য। বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে অভিযুক্ত সে। গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, জেএমবি চাঁইরা এ রাজ্যে তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় আল কায়দার ছাতার তলায় আশ্রয় নিয়েছে বারে বারেই। আবার তাদের নিজেদের সক্রিয় সংগঠনও রয়েছে। এই স্থানীয় সংগঠনগুলিই গোয়েন্দাদের মাথাব্যথার কারণ।