বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ণ থেকে শুরু করে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের একটা বড় অংশের অসন্তোষ ও উষ্মার কথা কারও অজানা নয়।
বাংলায় একই সঙ্গে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে। অনেকেরই অভিযোগ, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে স্থায়ী চাকরির সুযোগ কমছে। যাও বা নিয়োগ হচ্ছে তা স্বচ্ছ নয়।
পরিস্থিতি যখন এরকম, তখন বৃহস্পতিবার নামখানায় বিজেপির সভা থেকে দুটি বড় ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এক, বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলেই সপ্তম বেতন কমিশন গঠন করা হবে। দুই, বাংলায় রাজ্য সরকারি চাকরিতে ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হবে মহিলাদের জন্য।
বাংলায় পুরুষ ও মহিলা ভোটারের সংখ্যা প্রায় সমান। অর্থাৎ পুরুষ ভোটাররা কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ততটাই মহিলারাও। এমনিতেই নরেন্দ্র মোদী সরকার মহিলাদের মধ্যে একটা উপভোক্তা শ্রেণি তৈরি করার চেষ্টা গোড়া থেকেই করছে। সেই কারণেই জনধন অ্যাকাউন্ট মহিলাদের নামে খোলা হচ্ছে, তাঁদের নামেই উজ্জ্বলা যোজনায় রান্নার গ্যাস দেওয়া হচ্ছে।
চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব সেই প্রেক্ষাপটেই দেখা যেতে পারে। এমনিতে বাংলায় মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার হার বাড়ছে। আর্থিক ক্ষমতায়ণ ও সর্বনির্ভর হওয়ার আগ্রহও বাড়ছে তাঁদের মধ্যে। বিজেপি আশা করছে, অমিত শাহর প্রতিশ্রুতিকে তাঁরা ইতিবাচক ভাবে গ্রহণ করবেন।
আর্থ সামাজিক ভাবে মহিলাদের উন্নয়নের চেষ্টা এর আগে বাংলায় বা অন্য রাজেও হয়েছে। বাংলায় যেমন কন্যাশ্রী প্রকল্প শুরু হয়েছে, তেমনই মধ্যপ্রদেশে সেই ২০০৮ সাল থেকে চলছে লাভলি লাডলি যোজনা। দুটি প্রকল্পেরই উদ্দেশ্য একই রকম। তবে রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, এই ধরনের প্রকল্প চালু করেই শুধু মহিলাদের অনগ্রসরতা কাটানো যাবে না। সরকারি চাকরিতে মহিলাদের সংরক্ষণ দিলে তাঁদের আর্থিক ক্ষমতায়ণের পথ মসৃণ হতে পারে।
যদিও অমিত শাহ ঘোষণার পাল্টা সমালোচনা যে হয়নি তা নয়। ভোটের পরিস্থিতিতে এই ধরনের ঘোষণা সরাসরি বিরোধিতা করার ঝুঁকি কেউ নেয়নি। তবে কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, মোহন ভাগবতই বলেন, সংরক্ষণ দেওয়া হোক আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে। অথচ অমিত শাহরা ভিন্ন কথা বলছেন। ওঁদের মধ্যে স্ববিরোধ রয়েছে।