হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট এখন ব্যানার্জি স্ট্রিট হয়ে গেছে’, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারকে নিশানা দিলীপের

দিলীপ ঘোষের মর্নিং ওয়াক মানেই রোজ কিছু না কিছু টিপ্পনি। অনেকে বলেন, হয়তো একেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে চেয়েছিলেন, রাম চিমটি, শ্যাম চিমটি আর গোবর্ধন চিমটি! রাস্ক বিস্কুট দিয়ে চা খেতে খেতে রোজ সকালে নতুন নতুন টপিক।

মঙ্গলবার সকালে জগদ্দলে ‘চায়ে পে চর্চায়’ গিয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তার পর এদিনও..।

দিলীপ ঘোষ বলেন,“মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা বাংলাকে নিজের জমিদারি ভাবেন। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট এখন ব্যানার্জি স্ট্রিট হয়ে গিয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানা ৩০, বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। বিরোধীদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় অন্তত ৩৫টি প্লটের মালিকানা রয়েছে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কারও না কারও নামে। যার বাজার মূল্য কয়েক হাজার কোটি টাকা। এ সব ব্যাপারে এমনই হয়। সংখ্যার পর শূণ্য বসাতে গিয়ে বাজার দামের সঙ্গে সঙ্গতি থাকে না।

শুধু বিজেপি নয়। সিপিএমও এই অভিযোগ তুলেছিল। দলের মুখপত্রে প্লটের হোল্ডিং নম্বর ধরে মালিকানা কার কার নামে সে সব ছাপিয়ে দিয়েছিল তারা। বাম, কংগ্রেস, বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, কেবল প্লটের মালিকানাই নয়। ওই রাস্তায় বহু পুরনো সম্পত্তি থেকে মানুষকে উচ্ছেদ করে সম্পত্তি দখল করেছে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কেষ্ট-বিষ্টুরা। এদিন দিলীপবাবু সেটাই আর ও একবার উস্কে দিয়েছেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভার প্রচারে এসে ‘ভাইপো’-র পার্টি অফিস নিয়ে দখলের অভিযোগ তুলেছিলেন। বলেছিলেন, “ভাইপো তো রাস্তা দখল করে পার্টি অফিস বানিয়ে রেখেছেন। কেউ ভয়ে কিছু বলতে পারেন না। কিন্তু ভয়ের পরিবেশ বেশি দিন স্থায়ী হয় না, এটা যেন তাঁরা মনে রাখেন।” যদিও মোদী যে অফিসের কথা বোঝাতে চেয়েছিলেন সেটা সম্ভবত ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের অন্তর্গত আমতলায়।

তবে দিলীপবাবু এদিন যা বলেছেন, তা একেবারে আলটপকা নয়। বিশ্বভারতীকে রাস্তার জন্য একটা জমি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই জমি সোমবার ফেরত চেয়ে নিয়েছে নবান্ন। সেই প্রসঙ্গেই এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “একটা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী রাজনীতি করছেন, দখল করতে মাফিয়াদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন, এ জিনিস কোথাও দেখা যায়নি। যে ভাবে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট দখল করে ব্যানার্জি স্ট্রিট বানিয়েছেন সে ভাবে বিশ্বভারতী দখল করতে চাইছেন।”

বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পদাধিকার বলে তার আচার্য হলেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে ব্যাপারটা ঘুরে ফিরে সেই কেন্দ্র রাজ্য সংঘাতের জায়গায় এসে পৌঁছচ্ছে। অতীতে বাম জমানায় অবশ্য বিশ্বভারতী নিয়ে এতো বিবাদ হয়নি। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলার রাজনীতি এখন ওই ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াইয়ে এসে ঠেকেছে। জমি, রাস্তা, সড়ক, দেওয়াল, পাঁচিল, সিমেন্ট, সুড়কি নিয়ে বিবাদ এখন সে কারণেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.