রাজ্যবাসীর জন্য কিছু হলেও স্বস্তির খবর দিল মৌসম ভবন। পশ্চিমবঙ্গের উপকূল থেকে ক্রমেই ওড়িশার উপকূলের দিকে গতি বাড়িয়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সোমবার রাতের মধ্যে সিভিয়ার সাইক্লোনিং স্টর্ম বা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে বদলে গেছে ইয়াস। এদিন রাত থেকে আগামীকাল সকালের মধ্যে শক্তি আরও বাড়িয়ে ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিং স্টর্মের চেহারা নেবে। বুধবার ওড়িশার পারাদ্বীপ ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ওড়িশার বালাসোরের দক্ষিণে ও ধামরা বন্দরের উত্তরদিকের কোনও একটা জায়গায় ল্যান্ডফল হতে পারে ইয়াসের।
মৌসম ভবনের সকালে সাড়ে ১১টার বুলেটিনে দেখা গেছে, পারাদ্বীপ থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ২২০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান করছে ইয়াস। প্রতি ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে যাচ্ছে। বুধবার দুপুরের মধ্যে পারাদ্বীপ ও সাগর আইল্যান্ডের মাঝখানে বালাসোরের দক্ষিণে ও ধামারা বন্দরের উত্তরে পৌঁছে যাবে। ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিলোমিটার, বেড়ে হতে পারে ১৮৫ কিলোমিটার।
Rupnagar
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপট বেশি দেখা যাবে ওড়িশার চার জেলায়—কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, জগৎসিংপুর ও বালাসোর। এই চার জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নীচু এলাকাগুলি থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে এখনও অবধি ৮১ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, জয়পুর, কটকেও ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
Cyclone Yaas Live Update: Cyclone Yaas to hit West Bengal and Odisha coast on 26th May | Skymet Weather Services
বালাসোরের কাছাকাছি পশ্চিমবঙ্গের যে জেলাগুলি আছে সেখানে ঝড়ের প্রভাব বেশি দেখা যেতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঝড়ের তাণ্ডব বেশি হবে। সামুদ্রিক জলোচ্ছাস দেখা দিতে পারে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। আলিপুর হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে এখন যেখানে ঝড়ের অবস্থান সেখানে হাওয়ার বেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার, বেশি হলে ৬০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড় যত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমদিকে এগোবে ততই হাওয়ার বেগ বাড়বে। মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে, তা বেড়ে হতে পারে ৭০ কিলোমিটার/ঘণ্টা। বুধবার সকালে ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে, সবচেয়ে বেশি ৮০ কিলোমিটার আর বেলার পর থেকে ঘণ্টায় ৯০-১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। ল্যান্ডফলের সময় ওড়িশার বালাসোর, জগৎসিংপুর, ভদ্রক ও কেন্দ্রপাড়া এবং পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতি বাড়বে ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার। দুই পরগনার উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে হাওয়ার বেগ বেশি থাকবে ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিলোমিটার, আর বাকি ভেতরের জেলাগুলো যেমন হাওড়া, হুগলী ও কলকাতায় হাওয়ার বেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার।