কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাগুলির তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। জেলায় জেলায় ঘুরে তদন্ত করছে সিবিআইয়ের স্পেশাল টিম। এখনও অবধি রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় মোট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গত ১৯ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় খুন ও ধর্ষণের মামলাগুলির তদন্তের ভার দিয়েছিল সিবিআইকে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, এ সংকান্ত মোট ২৯টি খুনের এবং ১২টি ধর্ষণের মামলা রয়েছে। মামলাগুলি তদন্তের জন্য ২৪ জন তদন্তকারীকে নিয়ে মোট চারটি দল তৈরি করেছে সিবিআই। প্রতিটি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন, যুগ্ম অধিকর্তা বা জয়েন্ট ডিরেক্টর পর্যায়ের এক জন করে অফিসার। খুন, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ, অনধিকার প্রবেশ, অপহরণ, অস্ত্র আইন সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
হিংসার ঘটনাগুলির তদন্তের জন্য জেলায় জেলায় ঘুরছেন সিবিআই অফিসাররা। গত বৃহস্পতিবারই কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের বাড়িতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এর আগে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি, ভাটপাড়া, জগদ্দল এলাকার বেশ কিছু পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কথাবার্তা বলেন সিবিআই অফিসাররা। আজ শুক্রবার সিবিআই ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি টিম গিয়েছিলেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরের মনীন্দ্র পল্লীতে। নিহত বিজেপি কর্মী পলাশ মণ্ডলের খুনের তদন্তভারও নিয়েছে সিবিআই।
এখনও অবধি সিবিআই ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাগুলিতে যে ১১টি এফআইআর করেছে সেগুলি হল—
১) নদিয়ার গঙ্গাপুরে ৩ মে একটি দায়ের হওয়া একটি অভিযোগ। এক ব্যক্তিকে বাঁশ ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর অভিযোগ ওঠে ১২ জনের বিরুদ্ধে।
২) বাঁকুড়ার কোতলপুরে গত ৪ জুলাই অভিযোগ দায়ের হয়। আততায়ীরা এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়, পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় পুকুরের ধার থেকে। এটিকেও ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিবিআই।
৩) নদিয়ার চাপড়ায় তিনজনকে লোহার রড দিয়ে মারার অভিযোগ আট জনের বিরুদ্ধে। ১৪ মে দায়ের হয় সেই অভিযোগ।
৪) ১০ জুন বাঁকুড়ার নাত্রা গ্রামে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে লাঠি, বাঁশ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারার অভিযোগ। বাড়ি ভাঙচুর, মহিলাদের শ্লীলতাহানি, খুন ও অপহরণের মামলা দায়ের হয়েছে।
৫) মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে গণধর্ষণের অভিযোগ তিন জনের বিরুদ্ধে। গত ১০ মে দায়ের হওয়া এই অভিযোগকেও ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিবিআই।
৬) কলকাতার নারকেলডাঙায় এক ব্যক্তিকে লাঠি, বাঁশ দিয়ে মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টার অভিযোগ সাত থেকে আট জনের বিরুদ্ধে।
৭) উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ায় বোমাবাজি, খুন, বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ।
8) কোচবিহারের তুফানগঞ্জে খুন, খুনের চেষ্টার অভিযোগ ১৬ জনের বিরুদ্ধে।
৯) নদিয়ার কোতয়ালিতে লাঠি, বাঁশ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর, বোমাবাজি, বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ ১০ জনের বিরুদ্ধে।
১০) পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে বাড়ি ভাঙচুর, মহিলাদের মারধরের চেষ্টা, অনধিকার প্রবেশের অভিযোগ। ২২ বছরের একটি ছেলেকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
১১) দক্ষিণ ২৪ পরগনায় উশিতে মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টার অভিযোগ ৬ জনের বিরুদ্ধে।