ধবার মালদহের জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিজেপি মুসলমানদের দেয় ‘দে চিমটি’।
অনেকের মতে, দিদি সংখ্যালঘু ভোটের মেরুকরণ ঘটাতে মরিয়া। মুসলমানদের সে কারণেই বিজেপির জুজু দেখাচ্ছেন।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মমতার সেই বক্তৃতার পাল্টা জবাব দিলেন অমিত শাহ। ঠাকুরনগরের সভায় দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খোলাখুলি অভয় দিতে চাইলেন সংখ্যালঘুদের।
অমিত শাহ পষ্টাপষ্টিই বলেন,“মুসলমান ভাইদের বলছি, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে কারও নাগরিকত্ব যাবে না। এই পবিত্র ভূমিতে দাঁড়িয়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে এ কথা বলে যাচ্ছি। কারণ ওই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে। তা কেড়ে নেওয়ার জন্য নয়। এই যে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে, তা শুনবেন না।”
দিল্লির শাহিনবাগ থেকে কলকাতার পার্ক সার্কাস, ’২০ সালের গোড়ায় যখন দেশজুড়ে সিএএ বিরোধী আন্দোলন দানা বেঁধেছিল তখন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রশ্নটি বারবার সামনে এসেছিল। দেখা গিয়েছিল, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে উদ্বেগও কাজ করছে। তাতে রাজনৈতিক ইন্ধনও ছিল। এদিন যেন সেটাই দূর করতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিন ঠাকুরনগরে অমিত শাহর সভাকে কেন্দ্র করে মূল কৌতূহলের বিষয় ছিল একটাই। মতুয়া সম্প্রদায়ের আগ্রহ ছিল তাঁদের চিরস্থায়ী নাগরিকত্ব নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষ্কার করে কী বলেন তা শোনা। আবার ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিরও অনেকে দেখতে চাইলেন, সিএএ নিয়ে শাহ কী ঘোষণা করেন।
এদিন সভার শুরুতে অমিত শাহও বলেন, আমি জানি, সংবাদমাধ্যম থেকে তৃণমূল—সবাই নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়েই কথা শুনতে চায়।
এর পরই শাহ ঘোষণা করেন, কোভিডের টিকাকরণ শেষ হলেই নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যাবে। তাঁর কথায়, “এখানে মতুয়া ও নমঃশূদ্র সমাজের লোক রয়েছেন। যাঁরা বাংলাদেশ থেকে শরণার্থী হয়ে এসেছিলেন। দেশ ভাগের পর কংগ্রেসের নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, সম্মান দেওয়া হবে। উনিশের ভোটে আমরা বলেছিলাম, বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমরা মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেব। উনিশ সালে জিতেছি। বিশ সালেই নাগরিকত্ব সংশোধন বিল পাশ করিয়েছি”।
ঠাকুরনগরে অমিত শাহর এই সভার কিছুদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেখানে সভা করেছিলেন। সেদিন মমতা বলেছিলেন, “বিজেপি তো বলেছিল হ্যান কর দেঙ্গা, ত্যান কর দেঙ্গা, লেকিন কুছ নেহি কিয়া।”
পাল্টা এদিন শাহ বলেন, “মমতাদিদি বলতে শুরু করলেন, ঝুটা প্রতিশ্রুতি। কিছু হবে না। নাগরিকত্ব দেবে না। আরে মমতা দিদি। আমরা যা বলি তাই করি। আজ এই পবিত্র ভূমিতে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছি, টিকাকরণ পুরোদস্তুর শুরু হয়ে গেলে, করোনা থেকে মুক্ত হলেই নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু করে দেব।”