কলকাতায় চারজনের শরীরে ব্রিটেন স্ট্রেন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল চলতি বছর জানুয়ারিতে। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার প্রজাতিও থাবা বসাল শহরে। দক্ষিণ আফ্রিকার মিউট্যান্ট স্ট্রেনে আক্রান্ত একজন। স্বাস্থ্যভবন জানাচ্ছে, রাজ্যে নতুন আটজনের শরীরে করোনার বিদেশি স্ট্রেনের হদিশ মিলেছে। যার মধ্যে ব্রিটেন স্ট্রেনে আক্রান্ত পাঁচ জন।
স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, মার্চের ৮ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যাঁরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিলেন তাঁদের আটজনের শরীরে করোনার বিদেশি প্রজাতির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। ব্রিটেন স্ট্রেন তথা কোভিডের সুপার-স্প্রেডার বি.১.১.৭ স্ট্রেনে আক্রান্ত পাঁচ জন, যাঁদের মধ্যে দু’জন হাওড়া ও নদিয়ার, দু’জন উত্তরবঙ্গের এবং একজন জামশেদপুরের বাসিন্দা। আক্রান্তদের বয়স ২৫ থেকে ৪৬ বছরের মধ্যে। তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তবে ব্রিটেন ফেরত জামশেদপুরের যে বাসিন্দা রাজ্যে ঢুকেছিলেন তাঁর খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকার মিউট্যান্ট স্ট্রেনে আক্রান্ত আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন কলকাতার বাসিন্দা, বাকি দু’জন হাওড়া ও নদিয়ার। আক্রান্তরা মার্চের ৮ তারিখের পরে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে রাজ্যে ঢুকেছিলেন বলে খবর। এঁদেরও বয়স ২৫ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে।
করোনার নতুন স্ট্রেন শণাক্ত করতে হলে তার জিনোম সিকুয়েন্স করা জরুরি। কোভিড পজিটিভ রোগীদের রক্ত ও থুতু-লালার মধ্যে থাকা স্ট্রেনের জিনগত বিন্যাস বের করে তবেই নতুন স্ট্রেন চিহ্নিত করা সম্ভব। গত বছর ডিসেম্বরে ব্রিটেন ফেরত কোভিড আক্রান্ত ছ’জনকে বেলেঘাটা আইডিতে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের শরীর থেকে নেওয়া নমুনা পাঠানো হয়েছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স (এনআইবিজি)-তে। নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স তথা জিনের বিন্যাস বের করে চারজনের শরীরে ব্রিটেন স্ট্রেন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। এখন আবার দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন ধরা পড়েছে কলকাতায়। করোনার বিদেশি স্ট্রেন যাতে শহরে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে ব্যাপারে জরুরি বৈঠক করতে পারেন স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা। প্রয়োজনে আরও কড়া কোভিড বিধি জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
দেশে এখন করোনার বিদেশি স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা চারশোর বেশি। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব বলছে, গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কম করেও ১৫৮ জনের শরীরে বিদেশি ভ্যারিয়ান্টের হদিশ মিলেছে। চিন্তার কারণ হল, করোনার এই তিন বিদেশি স্ট্রেন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে যে একজনের শরীর থেকে অন্যজনের মধ্যে খুব তাড়াতাড়ি ভাইরাসের ট্রান্সমিশন হতে পারে। দেশে এমনিতেও করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে যদি ব্রিটেন বা দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন ছড়াতে শুরু করে, তাহলে সংক্রমণ আরও লাগামছাড়া হয়ে যাবে।