করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন যাঁরা তাঁদের আজ থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে। সে তালিকায় প্রথমেই থাকবেন দিল্লি এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া এবং নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল। দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানাচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কারণ টিকার এই ডোজকে বলা হচ্ছে ‘বুস্টার শট’ । এই শট নেওয়ার ১৪ দিন পর থেকেই শরীরে তৈরি হবে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি। যতদিন সেই অ্যান্টিবডি শরীরে টিকে থাকবে ততদিনই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। বেশি মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে ধীরে ধীরে হার্ড ইমিউনিটির পথে এগিয়ে যাবে দেশ।
১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ শুরু হয়েছে দেশে। এ যাবৎ ৭৭ লক্ষের টিকাকরণ হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে টিকাকরণ শুরু হয়। এখন স্বাস্থ্যকর্মী ও কোভিড ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারস তথা পুলিশ, প্রশাসসন, আধাসেনাদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, পরের পর্যায়ে প্রবীণদের টিকা দেওয়া শুরু হবে। সম্ভবত মার্চ মাস থেকে বয়স্কদের টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। সেই সঙ্গেই পঞ্চাশ বছরের কম কোমর্বিডিটি রোগী অর্থাৎ যাঁদের শরীরে ক্রনিক রোগ রয়েছে তাঁদের টিকার ডোজ দেওয়া হবে। জুলাই মাসের মধ্যে ৩০ কোটিকে টিকা দেওয়ার বৃহত্তর পরিকল্পনা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন বলেছেন, ২৬ দিনে ৭০ লাখের বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই সংখ্যায় পৌঁছতে আমেরিকার লেগেছে ২৬ দিন ও ব্রিটেনের ৪৮ দিন। সর্বাধিক টিকাকরণ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে, ৮ লাখের বেশি মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রে এই সংখ্যা ৬ লাখ ৩৩ হাজার ও গুজরাটে ৬ লাখ ৬১ হাজার। দেশের ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৬৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
টিকার দ্বিতীয় ডোজের পরেই শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ বাড়তে থাকবে বলেই জানিয়েছেন এইমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পর থেকে রক্তরস বা প্লাজমায় অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু হবে। কম করেও ছ’মাস ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দেবে অ্যান্টিবডি। সেই স্থায়িত্বকাল বেড়ে সাত থেকে আট মাসও হতে পারে। গবেষকরা আগেই বলেছেন, করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ইমিউনিটি বাড়ছে মানুষের শরীরে। ইমিউন কোষ বা মেমরি বি কোষ এখন অনেক সক্রিয়। তাই ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির স্থায়িত্বও বাড়ছে। সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে তার স্থায়িত্ব পাঁচ থেকে সাত মাস। যদি রোগীর শরীরে কোনও ক্রনিক রোগ বা জটিল সংক্রমণজনিত রোগ না থাকে তাহলে এই অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব আরও বাড়বে।