স্ট্র্যান্ড রোডের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে পূর্ব রেলের অফিস। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে চারজন দমকলকর্মী ও সহ ৯ জনের। অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এই টিকা দেওয়া হবে মৃতদের পরিবারের লোকজনকে। আগুনে জখমদের পরিবারপিছু ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডের নিউ কয়লাঘাটা বিল্ডিংয়ের অগ্নিকাণ্ডে এখনও অবধি ৯ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা আগুনের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যু হয়েছে চারজন দমকলকর্মীর। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুজন আরপিএফ কর্মী, একজন লিফটম্যান ও কলকাতা পুলিশের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর (এএসআই)। জানা গেছে, একটি লিফটের মধ্যে পড়ে ছিল ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) পার্থসারথি মণ্ডল ও তাঁর এক রক্ষীর দেহ। অন্য লিফটের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে চার দমকলকর্মী সহ সাতজনের দেহ।
সূত্রের খবর, স্ট্র্যান্ড রোডের ১৮ তলা ওই বিল্ডিংয়ের ১৩ তলা থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন এতটাই বিধ্বংসী চেহারা নেয় যে ১২ তলাও দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে। আগুনের উৎস কোথায় তার খোঁজ করতে গিয়েই বিপদে পড়েন দমকলকর্মীরা। জানা যাচ্ছে, কয়লাঘাটা ভবনের বিদ্যুৎসংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন না করেই লিফটে ঢোকেন দমকলকর্মীরা। ১২ তলায় ওঠার পরেই লিফটের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে যায়। মনে করা হচ্ছে, দরজা খুলে আর বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেননি কেউ। ভেতরেই ঝলসে মৃত্যু হয় দমকলকর্মীদের। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে।
দমকল সূত্রে খবর, হাইড্রলিক ল্যাডার এনেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। তাই আগুন ঠিক কোথা থেকে ছড়িয়েছে তা দেখতেই লিফটে করে ওপরে উঠেছিলেন দমকলকর্মীরা। তখনই বিপর্যয় ঘটে যায়।
গতকাল রাতেই দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন। ভিতরেও ঢোকেন তিনি। বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, লিফ্টের ভিতরে পাঁচজনের দগ্ধ দেহ মিলেছে, লিফ্টের বাইরে ছিল দু’জনের দেহ। মৃতের পরিবারগুলিকে দশ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল। চার সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।