দেশের করোনা গ্রাফ চড়চড় করে বাড়ছে। সংক্রমণের হার ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাল, দেশের ১৬টি রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের হার বেড়েছে প্রায় ১৫০ শতাংশ, যা রীতিমতো চিন্তার কারণ। চলতি বছরের গোড়ায় সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে ১৫ মার্চ অবধি সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা দেখা গেছে বেশিরভাগ রাজ্যেই। ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বেড়েছে, কোভিড পজিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হারও বেড়েছে একই সঙ্গে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলছেন, ১৬টি রাজ্যের ৭০টি জেলায় কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী। সংক্রমণের হার ছাড়িয়েছে ১৫০ শতাংশ। ১৭টি রাজ্যের ৫৫টি জেলায় কোভিড অ্যাকটিভ কেসের হার ১০০ শতাংশের বেশি। এর অর্থ হল সংক্রমণ বেশিজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্যসচিব বলছেন, বেশিরভাগ রাজ্যেই টিকাকরণের প্রক্রিয়া যথাযথ হচ্ছে না, করোনা বিধিও মানছেন না লোকজন। মাস্ক-সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মানা হচ্ছে না রাস্তাঘাটে, বাসে-ট্রেনে। আর এই কারণেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে বহু মানুষের মধ্যে।
কেন্দ্রের সমীক্ষা বলছে, ৭০টি জেলার মধ্যে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি পাঞ্জাবের রূপনগর জেলায়। মার্চেই সংক্রমণের হার বেড়েছে ২৫৬ শতাংশ। হরিয়ানার যমুনানগরে ৩০০ শতাংশ বেড়েছে সংক্রমণের হার। অন্যদিকে পাঞ্চকুলা, হিমাচল প্রদেশের সোলান, উনা, মহারাষ্ট্রের নানদুরবার, র্যাটলাম, গোয়ালিয়রে সংক্রমণের হার ৩০০ শতাংশের বেশি।
দেশের করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে মহারাষ্ট্র। অন্যদিকে সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাক্কা শুরু হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। গুজরাটেও সংক্রমণ লাগামছাড়া। দক্ষিণের কেরল, তামিলনাড়ু থেকে নতুন করে সংক্রমণের হার বৃদ্ধির খবর আসছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব বলছেন, মার্চের ১ তারিখে মহারাষ্ট্রে নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছিল সাড়ে সাত হাজারের কাছাকাছি, ১৫ মার্চ তাই বেড়ে ১৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। পাঞ্জাবে মার্চের শুরুতে নতুন সংক্রমণ ছিল পাঁচশোর কাছাকাছি, ১৫ মার্চের পর থেকে তা ২ হাজার ছাড়াতে শুরু করে। এর কারণ হল রাজ্যে কোভিড টেস্টের গতি কম। রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট হচ্ছে না বেশিরভাগ রাজ্যেই। সে কারণে সংক্রমণ ছড়ানোর হারও বাড়ছে। কোভিড পজিটিভিটি রেট ১১ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
সংক্রমণ রুখতে আরও বেশি নমুনা পরীক্ষার দিকে জোর দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে মোদী বলেন, অ্যান্টিজেন টেস্টের উপর বেশি জোর দিলে হবে না। আরটি- পিসিআর টেস্ট বেশি করতে হবে। তার মাধ্যমে আক্রান্তদের শনাক্ত করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আটকাতে টিকাকরণের প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও যথাযথ করার নির্দেশও দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেছেন, অনেক রাজ্যে কোভিড প্রতিষেধক নষ্ট হচ্ছে। প্রতিষেধক যাতে কোনও ভাবেই নষ্ট না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। করোনার প্রতিষেধক