দৈনিক সংক্রমণ অবিশ্বাস্য কম, নামল ৪৭ হাজারে, মহারাষ্ট্র-সহ পাঁচ রাজ্যে কমল অ্যাকটিভ রোগীও

 গত দু’সপ্তাহ ধরে দৈনিক সংক্রমণ ক্রমেই কমতির দিকে। চলতি সপ্তাহে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা নেমেছে ৫০ থেকে ৬০ হাজারে। আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সকালের বুলেটিনে দেখা গেল, দৈনিক সংক্রমণ আরও এক ধাপ কমে পৌঁছেছে ৪৭ হাজারের কাছাকাছি। কেন্দ্রের হিসেবে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ হাজার ৭৯০ জন।

দেশে এখন কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৭৫ লাখের বেশি। ভাল দিক হল কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমেছে। গত সপ্তাহে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা নেমেছিল আট লাখে। আজকের হিসেবে সেই সংখ্যা সাড়ে সাত লাখেরও কম। অ্যাকটিভ কেস ১০.২৩%। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইভাবে করোনা অ্যাকটিভ কেসের হার কমতে থাকলে ট্রান্সমিশন রেট তথা সংক্রমণ ছড়ানোর হারও কমবে। কোভিড কার্ভ আরও নিচের দিকে নামবে।

করোনায় মৃত্যু আরও কমেছে। একদিনে সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ৫৮৭ জন। কোভিডে মৃত্যুহার নেমেছে ১.৫২ শতাংশে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন বলেছেন, ভারতে করোনায় মৃত্যুহার এখন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম।

কেন্দ্রের তথ্য বলছে, কোভিড পজিটিভ রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, অন্তত ৫.৭৪ শতাংশ রোগী হাইপারটেনশনে আক্রান্ত, ৫.২০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস। তাছাড়া, বয়স জনিত অসুস্থতা, লিভারের রোগ, ক্রনিক কিডনির রোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), ম্যালিগন্যান্সি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউরোমাস্কুলার রোগ, কম প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি রোগেও কাবু দেশের বেশিরভাগ ভাইরাস আক্রান্তই। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনায় মৃত রোগীদের ১৩.৯ শতাংশই কোমর্বিডিটির শিকার। আর এই গ্রুপে রয়েছেন ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী রোগীরা। ষাটোর্ধ্ব ২৪.৬ শতাংশ কোভিড রোগীর মৃত্যুর কারণও কোমর্বিডিটি। এই রোগীদের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ছাড়াও কার্ডিয়াক রোগ, রেনাল ফেলিওর, ক্যানসার রোগী ও অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে এমন রোগীরা রয়েছেন।

করোনা সংক্রমণের শীর্ষে থাকা পাঁচ রাজ্য যথা মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমেছে। মহারাষ্ট্রে এখন করোনা সংক্রামিতের সংখ্যা ১৬ লাখের কাছাকাছি। তবে দৈনিক সংক্রমণ গত ৭ জুলাইয়ের পর থেকেই কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে বলে খবর। বাকি রাজ্যগুলিতেও সংক্রমণের হার আগের তুলনায় কম।

দেশে এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর তথা আর নম্বর গত সপ্তাহ থেকেই ০.৯২ পয়েন্টে স্থিতিশীল হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর নম্বর কমলে স্থায়ী হলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার হার কমবে। অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যাও কমে যাবে। পাশাপাশি, একজন আক্রান্তের থেকে বেশিজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর হারও কমবে। ট্রান্সমিশন রেটও একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে আসবে। আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিও কমতে থাকবে।

দেশে এখন করোনা আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার বেশি। কোভিড রিকভারি রেট ৮৮.২৮%। ৬৭ লাখের বেশি করোনা রোগী সংক্রমণ সারিয়েছেন। একদিনে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৭০ হাজার কোভিড রোগী। কোভিড টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে দেশে। এ যাবৎ ৯ কোটির বেশি করোনা পরীক্ষা হয়েছে। গতকাল নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১০ লাখের কাছাকাছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.