এখনও কাটেনি জট। মঙ্গলবার সন্ধেবেলা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন কৃষকরা। কিন্তু তারপরেও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। কারণ দু’তরফই নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল। সরকারের তরফে বলা হয়েছে, তাঁরা কৃষি আইনে কিছু সংশোধনী আনতে পারেন। কিন্তু কৃষকরা চান আইনের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার। তাই কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না। তার উপর বুধবার কৃষক ও সরকারের মধ্যে যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল তা বাতিল হয়েছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে কৃষক সংগঠনগুলির কাছে একটি প্রেজেনটেশন দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে এই আইনগুলিতে সরকার কী কী সংশোধনী আনতে পারবে ও অন্যান্য প্রস্তাব লিখিত আকারে বুধবার কৃষক সংগঠনগুলির কাছে পাঠানো হবে বলে খবর।
অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা মঙ্গলবারের বৈঠকের পরে বলেন, “কৃষক ও সরকারের মধ্যে বুধবার কোনও বৈঠক হচ্ছে না। কৃষক নেতারা একসঙ্গে বসে আগামী পরিকল্পনা ঠিক করবেন।”
গত শনিবারই কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের বৈঠক হয়েছে দীর্ঘ সাত ঘণ্টার। কিন্তু আন্দোলনের কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি সেখানে। কৃষক পক্ষের তরফে অবস্থানে অনড় আন্দোলনকারীরা। সেপ্টেম্বর মাসে পাস হওয়া তিনটি নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা হলে তাঁরা কোনও রকম ভাবেই আপস করবেন না। কর্পোরেটদের প্রবেশ তাঁরা মেনে নেবেন না কোনও কিছুর বিনিময়ে।
কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর এই আলোচনায় সরকার পক্ষের তরফে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, সরকারের কোনও ইগো নেই, কিন্তু সরকার কৃষকদের সমস্ত দাবিই মানতে রাজি কেবল কৃষিবিল প্রত্যাহার করা ছাড়া।
আন্দোলনকারীরা চান, সরকার নতুন তিনটি কৃষি বিল নাকচ করুক। গত সেপ্টেম্বরে তিনটি বিল পাশ হয়। সরকারের দাবি, এর ফলে দালালদের দৌরাত্ম্য কমবে। কৃষকরা দেশের যে কোনও জায়গায় উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারবেন। কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, নতুন কৃষি আইন কার্যকরী হলে তাঁরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাবেন না। কৃষি মান্ডিগুলি অচল হয়ে পড়বে। কৃষির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন পেশার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার নেতা বালকরণসিং ব্রার বলেন, “সরকার তিনটি আইন সংশোধন করার প্রস্তাব দিয়েছে। সরকার নিশ্চয়তাও দিয়েছে, কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম মূল্য তাঁরাই ঠিক করতে পারবেন। কিন্তু কৃষকেরা কোনও রকম মধ্যপন্থায় আসতে রাজিই নন, তাঁদের সাফ বক্তব্য আইন প্রত্যাহার করতেই হবে।”
আন্দোলনকারী কৃষকরা হরিয়ানা ও দিল্লির বিভিন্ন রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে অবস্থান করছেন। তাঁরা হুমকি দিয়েছেন, দাবি মানা না হলে রাজধানীকে দেশের অন্যান্য অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবেন। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে একাধিক বিরোধী দল। ফলে ক্রমেই আরও জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি।