ভারতে কোভিডে মৃতের ৭০ শতাংশই পুরুষ, জানাল স্বাস্থ্যমন্ত্রক

ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই কোভিডের কোপে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার মানুষের। আর এই মৃতের ৭০ শতাংশই পুরুষ, এমনটাই জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। অর্থাৎ কোভিডের মারণ কোপ পুরুষদের উপরেই বেশি পড়েছে।

মঙ্গলবার দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠকে এই কথা জানানো হয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, “ভারতে কোভিডে মৃত্যুর ৭০ শতাংশই পুরুষরা। ৬০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ শতাংশ।”

মৃত্যুর সংখ্যায় যেমন পুরুষরা এগিয়ে রয়েছে তেমনই আক্রান্তের সংখ্যাতেও এগিয়ে তারা। রাজেশ ভূষণ বলেন, “দেশে মোট করোনা আক্রান্তের ৬৩ শতাংশ পুরুষ। তার মধ্যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫২ শতাংশ। যদিও এই বয়স সীমার মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতে প্রতি ১০ লাখ জনসংখ্যায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এই মুহূর্তে ৩০০ জন, যা বিশ্বে সবথেকে কম। ছ’মাস পরে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা দেশে ২ লাখ ৭০ হাজার। ভারতে করোনার কিউমুলেটিভ পজিটিভিটি রেট ৬.০২ শতাংশ।

অবশ্য ভারতে ইতিমধ্যেই ব্রিটেন ফেরত ছয় যাত্রীর শরীরে পাওয়া গিয়েছে ব্রিটেনের করোনা স্ট্রেন। আর তারপরেই কড়া বন্দোবস্ত করেছে কেন্দ্র। ৯ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ দিনের মধ্যে যেসব যাত্রী বিদেশ থেকে ভারতে এসেছেন তাঁদের মধ্যে যাঁদের শরীরে উপসর্গ রয়েছে এবং যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মিউট্যান্ট করোনা টেস্ট হবে। অর্থাৎ তাঁদের নমুনার জেনম সিকুয়েন্সিং করে দেখা হবে। তারপরে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলবে কেন্দ্র।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই নতুন স্ট্রেনের মারণ ক্ষমতা বেশি কিনা বা ভ্যাকসিন দিয়ে তাকে আটকানো যাবে না, এরকম কোনও প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। কিন্তু এই স্ট্রেনের সংক্রমণ ক্ষমতা ৭০ শতাংশ বেশি। ফলে অনেক দ্রুত ছড়াতে পারে এই নতুন স্ট্রেন। সেটাই চিন্তার উদ্রেক ঘটাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। যেসব নমুনা নেওয়া হয়েছে সেগুলি বর্তমানে ইনসাকগ (ভারতে বিভিন্ন প্রজাতির করোনাভাইরাসের জেনম সিকুয়েন্সিংয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে এই ল্যাবরেটরি)-এ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। দেশে ১০টি ল্যাবরেটরিতে এই পরীক্ষা হয় বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের ৫ শতাংশ রোগীর নমুনা নিয়েও জেনম সিকুয়েন্সিং করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। তাহলে নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রায় থাকবে না বলেই জানিয়েছে তারা। তবে এই নমুনার মধ্যে বেশিরভাগটাই নেওয়া হবে মেট্রো শহরগুলি থেকে। কারণ এই শহরগুলিতে জনসংখ্যা ও ঘনত্ব বেশি এবং বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের বেশিরভাগই মেট্রো শহরে বাস করেন। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.