সুন্দরবনবাসীর চিকিৎসার সুবিধায় নয়া উদ্যোগ, ডায়মন্ড হারবারে চালু নতুন কোভিড হাসপাতাল

একাধিক উপসর্গযুক্ত করোনা রোগীদের সুবিধায় এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবারে চালু হল কোভিড (COVID-19) হাসপাতাল। প্রাথমিকভাবে ৪০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে ইতিমধ্যেই করোনার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। দ্রুতই হাসপাতালটিকে ৮০ শয্যায় রূপান্তরিত করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করোনার (Coronavirus) বলি হয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের দুই প্রশাসনিক আধিকারিক। বুধবার রাতে প্রয়াত হন ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার নোদাখালি থানার IC অনিন্দ্য বসু। বৃহস্পতিবার সকালে মন্দিরবাজার ব্লকের বিডিও সৈয়দ আহমেদের মৃত্যু হয়। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। ফলে সবদিক খতিয়ে দেখে এখানে নতুন কোভিড হাসপাতাল চালুর সিদ্ধান্ত নিল সরকার।

ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরেই সরকারি ব্যবস্থাপনায় বৃহস্পতিবার থেকে চালু হল নতুন কোভিড হাসপাতাল। মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল উৎপল দাঁ ও ভাইস-প্রিন্সিপাল রমাপ্রসাদ রায়ের তত্বাবধানে উপসর্গ থাকা করোনা রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে নতুন এই কোভিড হাসপাতালে। নির্মীয়মান চারতলা ভবনের দু’টি ফ্লোরের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল আগেই। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি থাকা রোগীর আত্মীয়দের রাত্রিবাসের জন্য ওই ভবনটি প্রথমে ব্যবহার হলেও, কোভিড পরিস্থিতিতে পরে সেটিকে ‘আইসোলেশন ওয়ার্ডে’ (Isolation) পরিণত করা হয়। সেই আইসোলেশন ওয়ার্ডের দু’টি ফ্লোরকেই এবার কোভিড হাসপাতালের রূপ দেওয়া হল। ডায়মন্ড হারবার মহকুমার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও সুন্দরবন লাগোয়া নামখানা, সাগরদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, রায়দিঘী-সহ প্রত্যন্ত এলাকার করোনা আক্রান্ত রোগীদের আর কলকাতায় যেতে হবে না। কাছাকাছি নতুন হাসপাতালেই তাঁরা চিকিৎসা করাতে পারবেন।

মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইস-প্রিন্সিপাল রমাপ্রসাদ রায় জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কোভিড হাসপাতালে ২২ জন রোগী ভরতি। ভবনের নীচের তলায় অক্সিজেন, ভেন্টিলেশন ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবা-সহ ১৬ শয্যার সিসিইউ এবং উপরতলায় করোনার উপসর্গ থাকা পুরুষ ও মহিলা রোগীদের জন্য আলাদা আলাদা ওয়ার্ডে ১২ টি করে মোট ২৪ টি শয্যা রয়েছে। পাঁচজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও অন্য কুড়িজন চিকিৎসক এই কোভিড হাসপাতালে বিভিন্ন শিফটে রোগীদের পরিষেবা দেবেন। এছাড়াও মেডিক্যাল কলেজের কনাসালট্যান্ট চিকিৎসকরাও কাজ করবেন। রোগীদের দেখভালের জন্য হাসপাতালে নিয়োগ করা হয়েছে নতুন ২৬ জন নার্সকে। টেকনিশিয়ান ও হাসপাতালের অন্যান্য পরিষেবার জন্য মোট ৮ জনকে নিয়োগ হয়েছে।

ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসক সুকান্ত সাহা জানান, পুজোর পর করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ডহারে বাড়ার আশঙ্কা থেকেই এই হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নির্মীয়মান ভবনটির অতিরিক্ত পরিকাঠামো তৈরিতে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ আইসোলেশন ওয়ার্ডটিকেই নতুন এই কোভিড হাসপাতালের রূপ দেওয়া হয়। একই ছাদের তলায় রোগীর করোনা পরীক্ষা ও তার রিপোর্ট থেকে শুরু করে আক্রান্ত রোগীর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষারও বন্দোবস্ত রয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই হাসপাতালটি আশিটি শয্যাবিশিষ্ট করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.