ক্রমশ যেন মৃত্যুপুরী হয়ে উঠছে বৌবাজার। মঙ্গলবার সকালেও দুর্গা পিথুরি লেনে ভেঙে পড়েছে একটি তিনতলা বাড়ি। জানা গিয়েছে, মেট্রোর কাজের জন্য কদিন আগেই এই বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। আজ সকালে জমি বসে গিয়ে পুরোপুরিই ধসে গিয়েছে ওই বাড়িটি।
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে মেট্রোর কাজ। সূত্রের খবর, হাইকোর্টের একটি জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছে আদালত। এই সময়ের মধ্যে বিশেষজ্ঞরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশ করবেন। তারপর আদালত অনুমতি দিলে তবেই ফের শুরু হবে মেট্রোর কাজ। এই সময়ের মধ্যে যাদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, সেই পরিবারের যে কোনও একজন সদস্য বাড়িতে গিয়ে মূল্যবান জিনিস সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে আদালত। আপাতত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের বৌবাজার হয়ে শিয়ালদা রুটের কাজ বিশবাঁও জলে। আর তাতেই এই মেট্রো প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠছে নানান প্রশ্ন।
গত শনিবার সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছিল বিপত্তি। একের পর এক বাড়িতে দেখা দিয়েছিল ফাটল। রাত বাড়তেই বাড়ে সমস্যা। ক্রমশ চওড়া হতে থাকে ফাটল। কোথাও খসে পড়ছিল চাঙড়, কোথাও বা বসে যাচ্ছিল জমি। এরপর রবিবার রাতে তিনটি বাড়ি ভেঙে পড়ে। নতুন করে ফাটল দেখা বেশ কিছু বাড়িতে। এখনও পর্যন্ত ঘরছাড়া হয়েছেন তিনশ-রও বেশি লোক। সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গেও। তার আগে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।
গোটা ঘটনার দায় স্বীকার করেছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, টানেল খোঁড়ার সময়ে সুড়ঙ্গে জল ঢুকেই এই বিপত্তি ঘটেছে। আপাতত গ্রাউটিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে সুড়ঙ্গের ফাটলে সিমেন্ট ভর্তি করে জল আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, যে সব বাড়ি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলি পুনরায় নির্মাণ করে দেওয়া হবে। বাকি বাড়ির ফাটলের মেরামতিও করা হবে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হাজির রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলাকারী দল। রয়েছেন মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররাও।