জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো ডাক্তার আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আবেশ সদলবলে বুধবার এনআরএস হাসপাতালে যান বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের সমর্থনে। এমন ছবি সামনে আসায় নতুন চাপ তৈরি হল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের নিন্দা করেন। ঠিক তখনই এনআরএস হাসপাতালে আসেন ডাক্তার আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই আন্দোলন তুলতে বদ্ধপরিকর তখন তাঁরই পরিবারের চিকিৎসক সদস্য এই আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোয় স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে।
তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মেয়ে শাব্বা হাকিম জানিয়েছেন এনআরএসকাণ্ডে তৃণমূল নেতৃত্বের ‘নীরবতা’ দেখে ‘লজ্জিত’তিনি।
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করে কলকাতার মহানাগরিক কন্যা শাব্বা হাকিম নীলরতন সরকার হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তার নিগ্রহকাণ্ডে সরব হয়েছেন। পেশায় ডাক্তার শাব্বা লিখেছেন, ‘‘এ রাজ্যের সরকারি ও অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে আউটডোর বয়কট করেছেন ডাক্তাররা। কিন্তু জরুরি বিভাগে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মানবিকতার খাতিরেই আমরা অন্য পেশার মতো কাজ বন্ধ করতে পারি না। যদি বাস বা ট্যাক্সি ধর্মঘট হয়, তবে একজন ট্যাক্সি চালক-বাসচালকও আপনাকে পরিষেবা দেবেন না, সে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন। যাঁরা বলছেন, ‘অন্য রোগীদের কী দোষ?’ তাঁরা দয়া করে সরকারকে জিজ্ঞেস করুন, সরকারি হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাঁরা কেন ডাক্তারদের নিরাপত্তা দিতে পারলেন না? দয়া করে জিজ্ঞেস করুন, যখন ২টি ট্রাকে করে গুন্ডারা এল, কেন সঙ্গে সঙ্গে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কেন হাসপাতাল চত্বরে এখনও গুন্ডারা ঘুরে বেড়াচ্ছে? শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে আমাদের। নিরাপদে কাজ করার অধিকার রয়েছে আমাদের’’। এরপরই আত্মসমালোচনার সুরে ফিরহাদ কন্যা লেখেন, ‘‘একজন তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক হিসেবে আমাদের নেতৃত্বের নীরবতা দেখে আমি খুবই লজ্জিত’’।
শাব্বার এই লেখা এবং মুখ্যমন্ত্রী ভাইপো আবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এনআরএস হাসপাতালে উপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।