নারদ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও বড় ধাক্কা খেল সিবিআই। চার হেভিওয়েট অভিযুক্তের জামিন শুনানিতে স্থগিতাদেশ চেয়ে মাঝরাতে আবেদন করার পরও লক্ষ্য সফল হল না। সেই মামলা গ্রহণই করল না শীর্ষ আদালত । সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের আবেদনে পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে, তাই তা গৃহীত হল না। নতুন করে মামলা দায়ের করতে হবে। এদিকে ফিরহাদ-সহ চার নেতা আরও দু’দিন গৃহবন্দি, পরবর্তী শুনানি বুধবার।
এদিকে আগামী বুধবার পর্যন্ত বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানি স্থগিতের আর্জি জানাল সিবিআই। বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানি স্থগিতের সিবিআই-র আবেদন খারিজ করল । শুরু হলো বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানি। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের জেলেরালের কাছে এই আর্জি। আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির কাছে এই মামলার শুনানির আবেদন। সিবিআই বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ সিবিআই-র। নারদ মামলায় (Narod Case) সুপ্রিম কোর্টে (Suprime Court) সিবিআই (CBI) । তবে আজই কলকাতায় নারদ মামলার হেভিওয়েট শুনানি হওয়ার কথা। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে নারদ মামলার স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) করেছে হাইকোর্টে ৪ জনের গৃহবন্দি থাকার বিষয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে। তবে আজ সকাল ১১টায় কলকাতা হাই কোর্টে নারদ মামলার বৃহত্তর বেঞ্চে (Larger Bench) শুনানি শুরু হয়েছে । সিবিআই আজই সুপ্রিম কোর্টে নারদ মামলার শুনানি যাতে হয় সেই আবেদন জানায়। এই মামলা যদি সুপ্রিম কোর্টে আজ শুনানির জন্য যায় তাহলে হাইকোর্টে আজ বৃহত্তর বেঞ্চের শুনানি হওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেবে। তবে আজ সকাল ১১টার সময় বৃহত্তর বেঞ্চে নারদ মামলার শুনানি শুরু হয়। সিবিআই হাইকোর্টের মামনীয় বিচারপতিদের কাছে নারদ মামলার মুলতুবি চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। অভিযুক্তদের কাছেও এই মর্মে চিঠি দিয়েছে। এদিকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সিবিআই-র আবেদনের বিরোধিতা করব। তবে সিবিআই কলকাতা হাইকোর্টে নারদ মামলার স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে।
এদিকে অভিযুক্তদের তরফের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে সওয়াল করার সময় বলছেন, “সিবিআই-র এই ভূমিকা আগে দেখা যায়নি।” অন্যদিকে সিবিআই-র আইনজীবী জেনারেল তুষার মেহতা সওয়াল করার সময় বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই দফতরে গিয়ে বসে আছেন, এমন ঘটনায় আগে দেখা যায়নি। এটা অন্য মামলায়তেও প্রভাব ফেলবে।”
তবে বিচারপতি ইন্দ্রাপ্রসন্ন মুখ্যোপাধ্যায় সিবিআই-র দিকে প্রশ্ন করে বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট এখনও পর্যন্ত সিবিআই-র আবেদন গ্রহণ করেনি। তাই হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি হলে আপনাদের অধিকার কী করে খর্ব হবে?” তুষার মেহতা বলেন, “অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তাই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছি। এখন হাই কোর্ট যা বলবে সেটাই মেনে নেবো। তবে যারা অসুস্থ তাঁরা হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কী করে?”
বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যে সাইক্লোন আছড়ে পর্বে। তার ফলে প্রযুক্তিগত সমস্যা হতে পারে। তাই আজ শুনানি স্থগিত রাখার প্রয়োজন কেন হচ্ছে? তুষার মেহতা আদালতে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী গুরুতর অসুস্থ বলে বলা হল। এর মধ্যে তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে এরা হাসপাতালের বারান্দায় ঘুরছেন। এটা কী করে হচ্ছে?”
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, “আমরা গ্রিন করিডোর করে সিবিআই-র আইনজীবীদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু এটা তাঁরা জানেন কী করে তাঁরা চার্জশিট দেবেন।” সলিসিটার জেনারেল বলেন, “আমরা অনলাইনে চার্জশিট পেশ করেছি।”
অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে বলেন, “জামিনের সময় কেন অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা হয়নি?”
অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে বলেন, “সিবিআই যে অভিযোগ করছে প্রভাবশালী তত্ত্ব উল্লেখ করে সেটা হয়নি।” এদিকে ইন্দ্রাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, “২০১৩ সালের মামলা। সাত বছর ধরে গ্রেফতার করার প্রয়োজন মনে করলেন না। এরা যখন জামিন পেলেন তখন এদের গ্রেফতার করার প্রয়োজন মনে করছেন?” অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে সৌমেন সেন প্রশ্ন করে বলেন, “আপনি কী বলতে চাইছেন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নিম্ন আদালতের নির্দেশের কপি দেখেননি?” অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “না”। রাজেশ বিন্দাল বলেন, “চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়ার আগে আমরা নির্দেশনামার কপি আমরা দেখছি।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের পর অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা বলেন, “শুধুমাত্র চিঠির ভিত্তিতে জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া ঠিক হয়নি। অভিযুক্তদের বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৪০৭ এর মামলা সিঙ্গেল বেঞ্চে শুনানির বিষয়।”