কলকাতায় অমিত শাহ-র রোড শো-কে নিয়ে ধুন্ধুমারের পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে শুরু করেছেন, বাইরে থেকে লোক এনে গণ্ডগোল পাকিয়েছে বিজেপি। এও বলেছেন, ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে যাদের এনেছিল, তারা বাংলার সংস্কৃতি বোঝে না।
মমতা যখন এমন কথা বলেন, তখন দেখা যায় সোশাল মিডিয়ায় এক শ্রেণির লোক একই সুরে এ ব্যাপারে টিপ্পনি করা শুরু করে। পরিস্থিতি যখন এমনই তখন কলকাতার অবাঙালি ভোটকে পুরোপুরি দিদির বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বৃহস্পতিবার শেষ দফার ভোট প্রচারে এসে দমদমে সভা করেন মোদী। সেখানে তিনি বলেন, বিহার, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ থেকে যাঁরা বাংলায় এসেছেন, তাঁরা জীবিকার জন্য এসেছেন। কিন্তু তার পাশাপাশি বাংলার উন্নতিতেও তাঁদের যোগদান রয়েছে। সেই উত্তরপ্রদেশ বিহারের মানুষদের নিয়েও দিদি তোমার সমস্যা রয়েছে দেখছি! কিন্তু কেন? সীমান্ত পার করে যে অনুপ্রবেশকারীরা বাংলায় ঢুকে পড়ছে, কই তাদের নিয়ে আপনার সমস্যা দেখছি না।
পর্যবেক্ষকদের মতে, দমদম এবং কলকাতার দুই আসনে অবাঙালি ভোটারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এলাকা ভিত্তিতে কোথাও কোথাও তাঁরাই সংখ্যাগুরু। এই তিন আসনের ভোটে অবাঙালি ভোটারদের বিজেপি-র অনুকূলে সঙ্ঘবদ্ধ করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ টেনে এনে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টাতেও ত্রুটি রাখলেন না।
এ দিন মোদীর সভার শেষে বিজেপি নেতারাও এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের বক্তব্য, বাংলায় আবেগে সুরসুরি দিয়ে বিভাজনের খেলা খেলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনি অসমে, বিহারে গিয়ে প্রচার করতে পারেন। আর অন্য রাজ্য থেকে বিজেপি-র কোনও নেতা বা কর্মী বাংলায় ভোটের কাজে এলেই ওনার মাথা গরম হয়ে যায়। কিন্তু ওঁরা তো এ দেশেরই নাগরিক। বাংলাদেশের নাগরিক তো নয়!
তবে তৃণমূলের নেতৃত্বের বক্তব্য, মোদী কথার মারপ্যাঁচে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করতে চাইছেন। দিদি কোনওভাবেই অবাঙালিদের বিরুদ্ধে নন। তিনি শুধু বলেছেন, বাইরে থেকে গুণ্ডা এনে কলকাতায় হামলা করেছে বিজেপি। এর অতিরিক্ত তিনি বলেননি।