কংগ্রেসের ‘মা-বেটা’ আর তৃণমূল কংগ্রেসের ‘বুয়া-ভাতিজা’। পরিবার রাজনীতির নিন্দা প্রসঙ্গে বারবার এই দুই উপমা ব্যবহার করেন নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে প্রচারে এসেও বারবার সেই কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু এবার আরও তীব্র আক্রমণ। জাতীয় রাজনীতিতে মমতার অংশগ্রহণের আসল লক্ষ্য বাংলায় ভাইপো অভিষেককে ক্ষমতায় বসানোর ইচ্ছা বলে এদিন মন্তব্য করলেন নরেন্দ্র মোদী।
চতুর্থ দফায় দক্ষিণ বঙ্গে সোমবার ভোটগ্রহণ হল আট আসনে। এখনও বাকি ২৪ আসনের ভোট। আর শেষ দুই দফার ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য বুঝিয়ে দিচ্ছে ছক বদলাচ্ছে বিজেপি। তৃণমূলের গড়ে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে ঘাসফুল বাহিনীর অন্দরের ক্ষোভ-বিক্ষোভকেই যেন অস্ত্র করতে চাইছে তারা।
লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হলেই রাজ্য বিজেপি অফিসে তৃণমূল সাংসদ, বিধায়কদের লাইন লেগে যাবে বলে অনেক আগে থেকে হুঙ্কার দিয়ে এসেছেন মুকুল রায়। কিন্তু সেই গর্জনের তুলনায় সামন্যই বর্ষণ হয়েছে। তবেকখনও সব্যসাচী দত্ত কখনও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা আদতে তৃণমূল কংগ্রেসের ভিতরে অবিশ্বাসের আবহ তৈরি করেছে। এদিন সেই অস্ত্রেই যেন ধার দিলেন মোদী। তাঁর দাবি, লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে ৪০ জন শাসকদলের বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই যোগাযোগ শুরু করেছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে দলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান নিয়ে অনেকের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। প্রথমে যুবা ও পরে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি হওয়া অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে না হলেও দলের অনেক নেতাই উষ্মা প্রকাশ করে থাকেন। এবার সেই ক্ষোভকেও যেন কাজে লাগানোর চেষ্টা দেখা গেল মোদীর বক্তব্যে।
বেশ রসিয়ে রসিয়ে নাটকীয় ভঙ্গিতে প্রসঙ্গে ঢোকেন মোদী। প্রথমে বলেন, “দিদি, দিল্লি বহুত দূর হ্যায়।” হুগলির চণ্ডীতলার সমাবেশে এই মন্তব্য করার পরেই সমাবেশে আসা কর্মী সমর্থকদের থেকে অনুমতি চেয়ে মোদী বলেন, “দিল্লি যে অনেক দূর সেটা দিদিও জানেন। কিন্তু মনে অন্য কিছু আছে। বলে দেব নাকি মনে কী আছে?” উল্লসিত জনতার বিপুল উল্লাস প্রকাশে প্রশ্নের উত্তর পেয়ে মোদী বলেন, “দিল্লি তো বাহানা হ্যায়, ইঁহা পর ভাতিজে কো জমানা হ্যায়।”
এটা সকলেইর জানা যে, তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা রীতিমতো ভয় পান নেত্রীকে। এবার সেটাকেও নির্বাচনী প্রচারে হাতিয়ার করলেন মোদী। এদিন তিনি বলেন, বাংলায় যা যা খবর আসছে তাতে বোঝা যাচ্ছে দিদির দুঃসময় শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই মোদীর উপরে রাগ মেটাচ্ছেন। ভয়ে দিদির দলের নেতারা নেত্রীর সামনে আসছেন না। সবার ভয়, মোদীর উপরে রাগ থেকে ঝাপট না মেরে দেয়।”