তোষণ ও বিকাশ সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। দেশ ও সমাজের কল্যাণ করতে হলে বিকাশের প্রয়োজন। অন্যদিকে তোষণ একটা ভারতীয় রাজনীতির জন্য একটা বড় ব্যাধি। বিগত বেশকিছু সময় ধরে তোষণ নামক রোগ ভারতের রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রবেশ করেছে। তোষণ এমন এক ব্যাধি যার জন্য দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ এতটাই তৈরি হয় যে সেটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রূপ নিতেও সময় লাগে না। ভারতে হিন্দুরা বহু সংখ্যক কিন্তু হিন্দুদের একতার অভাব থাকায় বহু সময় ধরে ভোটের লোভে রাজনৈতিক দলগুলি তোষণ রাজনীতি করে আসছে। ভারতে হিন্দুদের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়। কিন্তু এখনও ভোট ব্যাঙ্কের লোভে মুসলিমদের সংখ্যালঘু বলা হয় এবং আসল সংখ্যালঘু অর্থাৎ বৌদ্ধ, জৈন ইত্যাদিদের এড়িয়ে চলা হয়।
তবে সামান্য কিছু সময় ধরে হিন্দুদের একটু হলেও একতা লক্ষ করা যাচ্ছে যার জন্য ভারতীয়রা তোষণ ও বিকাশের মধ্যে পার্থক্য সঠিকভাবে উপলদ্ধি করতে পারছে। হিন্দুদের মধ্যে সামান্য একতা দেখা যাওয়ার কারণে দিন রাত নামাজ পড়া রাজনৈতিক নেতারাও এখন মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আসলে পুরোটাই তোষণের বিরুদ্ধে হিন্দুদের প্রতিবাদের ফল।
তবে তোষণ রাজনীতি যে খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে এমনটাও নয়। কারণ দেশের বহু প্রান্তে এখনও মুসলিম তোষণ চরম পর্যায়ে লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, কেরলের মতো রাজ্যগুলিতে ব্যাপকভাবে মুসলিম তোষণ চলে বলে অভিযোগ আসে।সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ থেকে এমনি এক ঘটনা সামনে এসেছে যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। খবর, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভা পার্থী মিমি চক্রবর্তীকে কেন্দ্র করে সামনে আসছে। যাদবপুর থেকে TMC এর হয়ে লোকসভা পার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।
কিন্তু রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করতে এসেই বার বার সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে মিমি চক্রবর্তীকে। সম্প্রতি হ্যান্ড গ্ল্যালপ্স পরে ভোটারদের সাথে হাত মেলানো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচিত হয়েছিলেন অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। আর এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে রমজান মাসের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে আরো একবার সমালোচনার সম্মুখীন হলেন মিমি। আসলে রমজানের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে উনি একটা ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে মিমি হিজাব পরে রমজানের শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়েছে। যা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
মিমি চক্রবর্তীর দ্বারা পোস্ট করা ছবি মুসলিম তোষণের উদাহরন বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। সবথেকে লক্ষণীয় বিষয় এই যে, মিমি তার ফেসবুক পেজে যে ছবি ছেড়েছেন সেখানের কমেন্টে মুসলিমদের বিরোধ দারুনভাবে লক্ষ করা গেছে। মিমি চক্রবর্তীর ছবির উপর কমেন্ট করে মতিউর রহমান নামের এক ফেসবুক ইউজার লিখেছেন,” আপনি মাথায় হিজাব না পড়ে এমনি শুভেচ্ছা জানালে বেশি খুশি হতাম। আমরা দুর্গাপূজা, দীপাবলির শুভেচ্ছা মাথায় তিলক কেটে জানায় না। শুভেচ্ছা অন্তর থেকে জানাতে হয় এগুলো সস্তা প্রচার।”
এমডি হাফিজুর নামক এক ফেসবুক ইউজার লিখেছেন, “ন্যাকামিটা ছাড়ুন । যদি শুভেচ্ছা জানাতেই হয় অন্তর থেকে জানান আপনার স্বাভাবিক ছবি দিলেই হতো । ভণ্ডামি বন্ধ করুন। নেত্রীর কপি করছেন। এরপর কোনোদিন ইনসাল্লাহ, খোদা হাফেজ বলবেন। কিছু জন মনে করবে মুসলিমদের জন্য অনেক কিছু করে দিয়েছে। সার্বিকভাবে উন্নয়নের কথা ভাবুন।” Shaifa laila নামক এক ইউজার লিখেছেন, “ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে রাজনীতির নোংরা খেলাটা খেলতে হবে, নাতো ময়দান জমবে কি করে তাই না !! মিমি একজন উচ্চ শিক্ষিত পরিবারের মেয়ে নিজেও শিক্ষিত… লজ্জা করে না এসব করে ভোট চাইতে ??”
কিছুজন লিখেছেন, ধর্ম ধর্মের জায়গায় থাক রাজনীতির জন্য এমন নাটক করা ঠিক নয়। মূলত সবার অভিযোগ ছবি নিয়ে, কারণ শুভেচ্ছা সাধারণ ছবি দিয়েও জানানো যেত। কিন্তু মিমি চক্রবর্তী হিজাব মাথায় নিয়ে যে ছবি দিয়েছেন সেটা অনেকেই ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি বলেই মনে করেছেন। উল্লেখ্য বিষয় এই যে, বসিরহাট থেকে TMC এর লোকসভা পার্থী নুসরত জাহানও রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছবি পোস্ট করেছেন।
কিন্তু ওই ছবি মিমি চক্রবর্তীর ছবি থেকে একদমই ভিন্ন। নুসরত হিজাব না পরেই রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছে অন্যদিক মিমি হিজাব পরে শুভেচ্ছা জানিয়েছে এই নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।