বিকেল তখন পৌনে পাঁচটা বাজে। জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, দার্জিলিং লোকসভা আসনের বহু বুথের বাইরে তখনও দীর্ঘ লাইন। মুকুল রায় দাবি করলেন, দ্বিতীয় দফায় এই যে তিন আসনে ভোট গ্রহণ হয়েছে, তার তিনটিতেই জিতবে বিজেপি।
অতীতে তৃণমূলের যখন সেকেন্ডম্যান ছিলেন মুকুলবাবু। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোট বা ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় তখনও এমন ভাবেই দাবি জানাতেন তিনি। ২০১৬ সালের ভোটেও তাই করেছিলেন। তা যে সবই মিলত তা নয়, আবার মিলত না তাও নয়। বিশেষ করে, ২০০৯ সালের ভোটে তৃণমূল যে বাংলায় ১৯টি বা তার বেশি আসন পাবে তা কেন্দ্র ধরে ধরে আগেই দাবি করতে শুরু করেছিলেন তিনি।
প্রশ্ন হল, বৃহস্পতিবারও যে দাবি তিনি করেছেন, তা কি হাওয়ায় হাওয়ায়? গোটা রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা মাত্র? নাকি প্রকৃতই তেমন কোনও আঁচ পেয়েছেন তিনি। বলে রাখা ভাল, প্রতিটা দফার ভোটের পর ‘জিতছি’, ‘জিতছি’ বলে রব তুলে দেওয়া মোদী-অমিত শাহ ঘরানার পরিচিত খেলা।
কিন্তু সরাসরি এ প্রশ্ন করা হলে, মুকুলবাবু বলেন, “আমি কখনও এ সব ব্যাপারে বাজে কথা বলি না। আজও বলছি না।” পালটা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, “পাবলিকের মুড দেখেছেন। ভোট দেওয়ার জন্য লোকের উৎসাহ! মানুষ মুখিয়ে রয়েছে ভোট দেওয়ার জন্য।” তাঁর কথায়, “এই ভোট বাংলায় শাসক দলের পক্ষে যেতে পারে না।”
যদিও মুকুলবাবুর এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের পাল্টা দাবি, তিন আসনে তৃণমূলই জিতছে। রায়গঞ্জ ও জলপাইগুড়িতে তৃতীয় স্থানে থাকবে গেরুয়া বাহিনী।
এর আগে প্রথম দফার ভোটের পরেও মুকুলবাবু দাবি করেছিলেন, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার আসনে বিজেপি জিতবে। তবে সে বার নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি বা বিজেপি নেতৃত্ব। বরং ভোট গ্রহণের দিন সন্ধ্যাতেই কোচবিহারে জেলা শাসকের দফতরের বাইরে ধর্নায় বসে পড়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক।
তবে এ দিনের ভোট গ্রহণ পর্বের শেষে মুকুলবাবু সে ধরনের অসন্তোষ প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, এটা ঠিক আগের থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন বাড়িয়েছে কমিশন। তবু সব আসনে কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে পারেনি। বিজেপি-র দাবি সব আসনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে।