কমিশনকে কড়া চিঠি মুকুলের। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি আধিকারিকদের সরাতে হবে, এমন দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
সূত্রের খবর, চিঠিতে রাজ্য পুলিশের ডিজি বিজেন্দ্রকে সরাতে বলেছেন মুকুল। তাঁর বক্তব্য, যে সরকারি আধিকারিক ও কর্মচারীদের কাজে লাগিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল, তাঁদের ওপর কোনওভাবেই ভরসা করা যায় না। নির্বাচন কমিশনকে তাই অবিলম্বে ওইসব সরকারি আধিকারিকদের বদলি করতে হবে। ঘটনাচক্রে শুক্রবার রাতেই কলকাতার পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনাররেটের প্রধান জ্ঞানবন্ত সিংকে বদলি করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ঘটনার জেরে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। মনে করা হচ্ছে মুকুলের পত্রাঘাত মমতার চিঠির উত্তর স্বরুপ। রাজনৈতিক চাপ পাল্টা চাপের খেলায় ওস্তাদ মুকুল এবার বিজেপির শিবির থেকে টক্কর দিচ্ছেন তাঁর প্রাক্তন নেত্রীকে।
উল্লেখ্য, মুকুল রায় তাঁর চিঠিতে কোচবিহার, বীরভূম সহ বেশ কিছু জেলার জেলাশাসকদের বদলি করার কথাও বলেছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ডিজি তৃণমূলের পার্টি ক্যাডারের মত কাজ করেছিলেন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে। যার ফলস্বরূপ এ রাজ্যে পঞ্চায়েত সন্ত্রাসে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এমনই সব তথ্য সম্বলিত চিঠি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন নিয়ে কমিশনে পাঠিয়েছেন মুকুল রায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অতীতে বীরভূম জেলার ৪২ টি জেলা পরিষদ আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দল। সেক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছিল বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। ব্যবস্থা নিতে পারেননি রাজ্য পুলিশের ডিজি বিজেন্দ্রও। রাজ্য পুলিশের ডিজির নিষ্ক্রিয় থাকার বিষয়টি চিঠিতে ফলাও করে লিখেছেন মুকুল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার আলিপুর মহাকুমা তথা ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি বলেও অভিযোগ করেছিলেন সে সময় বিরোধীরা। সূত্রের খবর মুখ্যমন্ত্রীর সাংসদ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকায় যে পঞ্চায়েত ভোট করা সম্ভব হয়নি তা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী বর্তমান বিজেপি নেতা।
বর্তমানে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনের নির্বাচনকে ঘিরে উত্তরবঙ্গের রয়েছেন মুকুল রায়। সেখান থেকেই নির্বাচন কমিশন এই কড়া চিঠি দিলেন তিনি। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের আসনগুলিতে যাতে শাসকদলের সন্ত্রাস রোখা যায় তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুকুলকেই।