বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে প্রথম দফার ভোট। আর প্রথম দফায় কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, যেসব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই, সেখানে ভোটে কারচুপি করার চেষ্টা করেছে শাসকদলের কর্মীরা। শাসকদল আবার অভিযোগ করেছে, কিছু কিছু কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি। এই অবস্থায় দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে রাজ্যে আসছে আরও ২৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এমনটাই জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে।
প্রথম দফার ভোটের জন্য কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার, এই দুই রাজ্যে মোট ৮৩ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। তাঁর মধ্যে কোচবিহারে মোতায়েন করা হয়েছিল ৪৭ কোম্পানি আধাসেনা। এছাড়াও এই রাজ্যে মোতায়েন ছিল ২ হাজার রাজ্য পুলিশ। কোচবিহার জেলার ২ হাজার ১০টি বুথের মধ্যে ১২৫৩ বুথে মোতায়েন ছিল আধাসেনা। বাকি ৭৫৭টি বুথে মোতায়েন করা ছিল রাজ্য পুলিশ। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী এই জেলায় স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ছিল ৮১৪।
অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারে মোতায়েন করা হয়েছিল ৩৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই জেলায় ৩ হাজার রাজ্য পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছিল। আলিপুরদুয়ারের ১৮৩৪টি বুথের মধ্যে ৮১৪টি বুথে নজরদারির দায়িত্বে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাকি ১০২০টি বুথে রাজ্য পুলিশের উপরেই ছিল নিরাপত্তার দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী এই জেলায় স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা ছিল ৭৩০টি।
বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরু হতেই শাসকদল ও বিরোধীপক্ষ দু’দলের তরফেই অভিযোগ জানানো হয় কমিশনে। কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক অভিযোগ করেন, বারবার কমিশনে ফোন করে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও ব্যবসথা নেওয়া হয়নি। অনেক বুথে তৃণমূল কারচুপি করার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। অন্যদিকে কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবি ঘোষ আবার অভিযোগ করেন, বর্ডার থেকে বিএসএফ এসে অনেক বুথে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ফোন করে পুরোটা জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূল ও বিজেপি দু’দলই কোচবিহারে রিপোলিংয়ের দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা অভিযোগ করেছেন, একটি বুথে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকরাও একে অন্যের বিরুদ্ধে মারধর ও ঝামেলা পাকানোর অভিযোগ করেছে। কয়েকটি জায়গায় গণ্ডগোলের খবর পাওয়া গিয়েছে। অভিযোগ পেয়ে কিছু বুথে গিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে আধাসেনা।
১৮ এপ্রিল রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও রায়গঞ্জ, এই তিন কেন্দ্রে ভোট হবে সে দিন। আর সেইজন্যই রাজ্যে আসছে আরও ২৫ কোম্পানি আধাসেনা। অর্থাৎ মোট ৯৮ কোম্পানি আধাসেনা থাকবে দ্বিতীয় দফার ভোটে। নির্বাচিন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম দফার ভোটে সুষ্ঠু ভোটই হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছেন কমিশনের আধিকারিকরা। কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফার ভোটেও যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না হয়, তাঁর জন্য যথেষ্ট তৎপর নির্বাচন কমিশন। যেহেতু এ বার তিনটি কেন্দ্রে ভোট, তাইজন্যই আরও ২৫ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যে সুষ্ঠু ভোট করানোর জন্য সবরকম ভাবে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন।