শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদিনের সফরে রাজ্যে এসে পৌঁছন। সিএএ বা এনারসিকে সরিয়ে জাতীয়তাবাদী বক্তব্যই ছিল মোদির ভাষণে। ভারত ও বাংলার সংস্কৃতিক পুনর্জাগরণেরকথার মধ্যে দিয়েই তিনি জাতীয়তাবাদী প্রচার করেন বাংলার মাটিতে। বলেন, স্বাধীনতার আগে ইংরেজরা বাংলা তথা ভারতের প্রতিভাদের স্বীকৃতি দেননি। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে স্বাধীনতা পেয়েও। কিন্তু আর হবে না।
বিশ্বের দরবারে দেশের গৌরব ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে বদ্ধ পরিকর তারা। সেই পরিকল্পনা মাফিক কলকাতা যাদুঘর সহ দেশের পাঁচটা যাদুঘরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হবে বলে ঘোষণা করেন মোদি। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদী মুদ্রা বিল্ডিং সহ চারটি ভবন জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার পাশাপাশি হাওড়া ব্রিজের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোর উদ্বোধন করেন। এর পরে তিনি বেলুড় মঠে পৌঁছন ।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী কলকাতা বন্দর ট্রাস্টের দেড়শতম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনে অংশ নেবেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কলকাতা বিমানবন্দরে রাজ্যপাল জগদীপ ধানখার, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং অন্যান্য নেতারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। মোদি রাজ্যে পা দেওয়ার আগেই টুইট করে এখানে আসার জন্য উচ্ছাস প্রকাশ করেছিলেন ।
রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে তার স্মৃতিচারণের মধ্যে দিয়ে যা আরেকবার প্রতিফলিত হয়। বলেন,”আমি এখানে এলে মন আনন্দে ভরে যায়। এখানে এক নতুন শক্তি অনুভব করি। আমি যখন মহান শিল্পীদের কাজ দেখি, তখন আমি সেই মুহুর্তগুলিতে বেঁচে থাকি। মোদী বলেন, বাংলা সুভাষ চন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, জগদীশ চন্দ্র, শরৎচন্দ্র এবং আরও অনেক চন্দ্র (চাঁদ) দেশকে দিয়েছে। এখন কলকাতায় ‘বিপ্লবী ভারত’ নামে একটি জাদুঘর তৈরি করা হবে যা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, অরবিন্দ ঘোষ, রস বিহারী বোস, খুদি রাম বোস, দেশবন্ধু, বাঘা যতীন, বিনয়, বাদলের মতো দুর্দান্ত যোদ্ধাদের চরিত্র ও তাদের কাজ দেখার সুযোগ থাকবে।
সংস্কৃতির দুর্দান্ত কাকতালীয় ঘটনা প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন যে ২০২২ সালে আমরা যখন স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উৎ যাপন করব, তখন তার আরেকটি তাৎপর্এযও থাকবে। মহান সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ রাজা রামমোহন রায়ের সেই বছর ২৫০ তম জন্মবার্ষিকী পালন করবে গোটা দেশ ।
ঠিক যেমন বর্তমানে আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। শনিবারের রাজ্যসফরের দিনে এগিয়ে রইলেন মোদি। মমতার মুখে যেখানে সেই সিএএ এনারসির মত বিতর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে এক ই রেকর্ড বাজতে শুনল রাজ্য তথা দেশবাসী, সেখানে মোদি বাংলা তথা ভারতের সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে রাজনীতির উর্ধে উঠে খুব সহজেই মন জয় করে নিলেন আপামর বঙ্গবাসীর ।