নৌকো বদল?
নাকি আপাতত দু’নৌকোয় পা?
দিল্লিতে সনিয়ার ডাকা বিরোধী ঐক্যের সমাবেশে না গিয়ে, বিধানসভায় সিএএ প্রস্তাব কার্যত পাস করতে না দিয়ে রাজ্য তথা সর্বভারতীয় রাজনীতিতে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছেন মমতা। সাধারণ ভাবে জল্পনাটি এরকম যে মমতা বুঝি লাইন চেঞ্জ করলেন!
প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্যে বাম ও কংগ্রেস মমতার এই ভূমিকাকে মোদির প্রতি বার্তা হিসেবেই দেখতে ও দেখাতে চাইছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ইতিমধ্যেই বলেছেন, বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে মোদির নেক নজরে আসার চেষ্টা করছেন মমতা। বাম ও কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই মোদি মমতা বা বিজেপি তৃণমূলের গোপন আঁতাতের অভিযোগ করে আসছে। মমতার সাম্প্রতিক ভূমিকা তাদের দাবিকে মান্যতা দিল বলেই মনে করছে তারা। উল্টোদিকে অভিজ্ঞ রাজনীতিক মমতাও তাঁর এ হেন সিদ্ধান্তে জনমানসে সংশয় দানা বাঁধতে পারে ধরে নিয়ে এক হাতে বাঁশী ধরলেও অন্য হাতে ধরা অসিটি এখনই ছেড়ে দেননি।
‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শহরে থাকবেন! আর প্রতিবাদে নামবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?’ বিভিন্ন বাম মহল, ছাত্র সংগঠন ও কংগ্রেসের তোলা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে নাগরিক সংশোধনী আইন (CAA) ও এনআরসির (NRC) বিরুদ্ধে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
শুক্রবার থেকে রানী রাসমণি এভিনিউতে ধরনা কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তৃণমূলের একটি অাভ্যন্তরীণ সূত্র জানাচ্ছে, এদিন বিকেল পাঁচটা পনেরো নাগাদ ওই ধরনা কর্মসূচীতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। থাকবেন প্রায় এক ঘন্টা।
আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে আবার নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) শহরে রয়েছেন অথচ তৃণমূল নেত্রী তাঁর বিরুদ্ধে কোনওরকম প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হননি, এমন বার্তা ছড়িয়ে পড়লে, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক প্রভাবিত হতে পারে। কারণ রাজ্যের সিংহভাগ সংখ্যালঘু ভোট এখন মমতার পকেটে। প্রথমে দিল্লিতে কেন্দ্র বিরোধী বিরোধীদের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার ঘোষণা। পরে প্রধানমন্ত্রীর কলকাতায় উপস্থিতিতে কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি না নেওয়া। মুখ্যমন্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডে তাঁর মুসলিম ভোটাররা বিরুপ হতে পারেন। সেই কারণেই এদিন ছাত্র পরিষদের সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল নেত্রী এমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল।
নীল রায়