রবিবাসরীয় ব্রিগেডে সেই মহাগুরু, মিঠুন চক্রবর্তী যেন পরতে পরতে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, ওই দল আর মা মাটি মানুষের নেই। বরং মানুষের হকের জিনিসও ছিনিয়ে নিচ্ছে তাদের কেউ কেউ। আর তার পরই মহানাটকীয় কায়দায় বললেন, “আমি জানি আপনারা আমার কোন ডায়লগ শুনতে চাইছেন। বলব বলব, সেটা বলব।….মারব এখানে লাশ পড়বে শশ্মানে। তবে এ বার নতুন ডায়লগ হবে।”
কী সেই ডায়লগ?
তাঁর সেই কিংবদন্তী ভারী গলায় মিঠুন বলেন, “আমি জলঢোঁড়া নই বেলেবোড়াও নই। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলেই শেষ! ভয় পাবেন না, আমি আপনাদের পাশে ছিলাম আছি থাকব। এখান থেকে যাব না।”
এদিনের সভায় মিঠুন তাঁর ছোটবেলার কথা বলেন। তাঁর কথায়, “জোড়াবাগান থানার পিছনে একটা ব্লাইন্ড লেনে আমি থাকতাম। অন্ধ গলি। খামের উপর লিখতে হত জোড়াবাগান থানার পিছনে। নইলে চিনতে পারত না। আর সেখানে বসে আমি স্বপ্ন দেখতাম বড় হওয়ার। আজ এতো বড় মঞ্চে এই যে আমি আসতে পেরেছি, পৃথিবীর সব থেকে বৃহৎ গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী এই মঞ্চে আসছেন, এটা স্বপ্ন নয়?”
এরপরই চোয়াল শক্ত করেন ‘মিঠুনদা’। বলেন, “১৮ বছর বয়স থেকেই আমি স্বপ্ন দেখতাম গরিবের জন্য কাজ করব। আমি বাঙালি। গর্বিত বাঙালি। আমি মনে করি বাংলায় যাঁরা থাকেন তাঁরা সবাই বাঙালি। আপনাদের সবার অধিকার রয়েছে। আর আপনাদের হক যদি কেউ কেড়ে নেওয়ার কথা বলেন, ছেড়ে কথা বলবেন না।”
হিন্দি চলচ্চিত্রে গোলগাল নায়কের ভূমিকায় মিঠুনের উত্থান ঘটেনি। তিনি অ্যাংরি ইয়ং ম্যান। মৃগয়া থেকে শুরু করে অগ্নিপথ— সবেতেই তাঁর চরিত্র প্রতিবাদী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছে। বাংলার এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে বাঙালির ছেলে এক সময়ে দাদাগিরি চালিয়েছেন মুম্বইয়ে। ব্রিগেডের মঞ্চে মিঠুনের এই উপস্থিতি বাংলা ও বাঙালিদের মনে প্রভাব ফেলবে বলেই আশাবাদী। রবিবার ব্রিগেডে ছিলেন তিনি। হয়তো আগামী দিনে বাংলার শহর গঞ্জেও বিজেপিক প্রচার সভায় দেখা যেতে পারে তাঁকে।