৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় যেতে বাধা পরিবারকে, চাঞ্চল্য রায়গঞ্জে

ধর্ষিতা হয়েছে ৭ বছরের শিশু। অথচ সাতদিন পেরিয়ে গেলেও থানায় অভিযোগটুকু পর্যন্ত জানাতে পারেনি পরিবার। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে রায়গঞ্জে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। শিশুর পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের খবর জানতে পেরেই সালিশি সভা বসায় গ্রামের মাতব্বররা। সেখানেই দেওয়া হয় নিদান। কিন্তু শিশুর বাবা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাতে চাইলে তাঁকে পুলিশের কাছে যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গ্রামের মুরুব্বিদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে শিশুর পরিবার।

এই ঘটনা ঘটেছে রায়গঞ্জের ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ইতিমধ্যেই গা ঢাকা দিয়েছে মূল অভিযুক্ত আইনুল হক। অভিযোগ, গত সোমবার ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েতের এক গ্রামে ৭ বছরের এক শিশুকে নিজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী বছর পঞ্চাশের আইনুল হক। রাতে বাড়ি ফিরে মাকে সব কথা খুলে বলে ওই শিশু। মঙ্গলবার শিশুর বাবা বাড়ি ফিরলে সব কিছু জানতে পেরে পুলিশে অভিযোগ জানাতে যেতে চাইলে গ্রামের মুরুব্বিরা তাঁকে অভিযোগ জানাতে যেতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। শিশুর পরিবারের অভিযোগ, সালিশি সভা ডেকে সব মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেন মুরুব্বিরা।

এদিকে সূত্রের খবর, অভিযুক্ত আইনুল হকের বিরুদ্ধে মাস তিনেক আগে ঠিক একই ধরনের শিশু ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনাতেও মাত্র ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়েছিল আইনুল। এবার ফের ওই একই লোকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠলেও পুলিশে অভিযোগ জানাতে দেয়নি গ্রামের কর্তাব্যক্তিদের একাংশ। এই ঘটনার দিন চারেক পর আইনুল গা ঢাকা দিলে দায় এড়িয়ে গোটা ব্যাপার থেকে গ্রামের মুরুব্বিরা নিজেদের সরিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেছে ওই নির্যাতিতা শিশুর পরিবার।

শিশুর পরিবারের অভিযোগ, গ্রামের প্রধানের কাছে বারবার দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত ঘটনার ৭ দিন পর রায়গঞ্জ মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ করে শিশুর পরিবার। এরপরেই ওই শিশুর মেডিক্যাল টেস্টের জন্য তাকে রায়গঞ্জের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।

ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান মহম্মদ ইউসুফ আলি সালিশি সভার নিদানের কথা স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি শিশুর যে ধর্ষণ হয়েছে সে কথা নাকি তাঁকে জানায়নি বাচ্চাটির পরিবার। প্রধানের কথায়, গ্রামে যে এরকম সালিশি সভা বসিয়ে নিদান দেওয়া হয়েছে এবং শিশুর বাবাকে থানায় যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে তার সবটাই তিনি জেনেছেন ঘটনার অনেক পরে এবং শিশুর বাবা তাঁকে ধর্ষণের কথা জানাননি বলেই দাবি করেছেন প্রধান। তিনি বলেন, সবতা আগে জানতে পারলে তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হত। তবে এখন সবরকম ভাবে শিশুর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.