গতকাল, ১৫ই জুন,২০২০ তারিখে রাস্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের চিকিৎসক সংগঠন ন্যাশনাল মেডিকোস অর্গানাইজেশন (NMO) এবং স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সেবামুলক প্রতিষ্ঠান সমাজ সেবা ভারতীর যৌথ উদ্যোগে, সুন্দরবন অঞ্চলের আম্ফান কবলিত বিস্তীর্ন অঞ্চলে একটি মেগা মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজিত হয়।ভয়াবহ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের লাখো লাখো প্রান্তিক মানুষ, যাদের মাথার উপরে খোলা আকাশ, আর খাদ্যের ভাড়ারে শুধুই শুন্যতা, আর গোঁদের উপরে বিষফোড়া আম্ফানের পরে নানা রকমের অসুখ বিসুখ, তাদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতেই আজ আয়োজিত হয় এই মেগা মেডিকেল ক্যাম্প।একটা দুটো নয়, দশ টা মেডিকেল ক্যাম্প একই সাথে এক ই দিনে বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের সাথে করোনা মুকাবিলার অদ্বিতীয় হাতিয়ার মাস্ক বিতরন করে, পর্যাপ্ত পরিমানে।
বসিরহাটের প্রত্যন্ত সুন্দরবন লাগোয়া অঞ্চল যেমন গোবিন্দাকাটির মালেকানগুমটি, যোগেশগঞ্জ সাহেব খালি থেকে শুরু করে ন্যাজাট,বাউনিয়া হয়ে বাছড়া- মোহন পুর পর্যন্ত এই বিস্তীর্ন অঞ্চলে সকাল ৯ টা থেকে শুরু করে দুপুর দুটো অব্দি অভাবী, প্রান্তিক মানুষদের জন্য এই চিকিৎসা -সেবাকার্য চলে।সারাদিনে এই সমগ্র অঞ্চলে ১৫০০ র উপরে রোগী দেখেন ন্যাশনাল মেডিকোসের প্রখ্যাত ডাক্তারবাবুরা। আজকের এই সেবাকার্যে ব্যাক্তিগত ভাবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল মেডিকোস অর্গানাইজেশনের রাজ্য সভাপতি ড: প্রভাত সিং এবং অর্গানাইজেশনের পশ্চিমবঙ্গের দায়ীত্বপ্রাপ্ত অফিস সেক্রেটারি ড: শৌর্য ব্যানার্জী। ড: ব্যনার্জি জানান এই আম্ফান পরবর্তী সময় থেকেই তারা উত্তর এবং দক্ষিন ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে লাগাতার বিনামুল্যে চিকিৎসা পরিষেবার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।এর আগেও সঙ্ঘের শিক্ষক সংগঠন ABRSM এর সাথে যৌথ উদ্যোগে রুপমারী এবং কুমিরমারী অঞ্চলেও একদিন চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। ড: ব্যানার্জি বলেন "শিব জ্ঞানে জীব সেবাই আমাদের মুল প্রতিপাদ্য। আর্ত পীড়িতের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের সংগঠন নৈতিক দায়ীত্ব এবংকর্তব্য বলেই মনে করে"।
সংগঠনের মোট ২৪ জন ডাক্তার বাবু আজ দশ টি শিবিরে ভাগ হয়ে লাগাতার রোগীদেখা,
তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ পত্র এবং মাস্ক বিতরনের কাজ করেন।চালচুলোহীন অসহায় মানুষগুলো যেখানে দুবেলা দুমুঠো ক্ষুধার অন্ন জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছেন, তখন নানা রকমের রোগে জর্জরিত মানুষগুলোর কাছে ডাক্তারবাবুরা যেন স্বয়ং ভগবান।বিনামুল্যে ডাক্তার দেখিয়ে, প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে এবং সবশেষে পরিবারের সবার জন্য করোনা মুকাবিলার মাস্ক নিয়ে তারা তৃপ্ত মনে বাড়ি ফিরেছেন।একজন ডাক্তারবাবু তো বলেই ফেললেন এই মানুষগুলোর খুশীমুখ দেখার জন্যেই সঙ্ঘের এই চিকিৎসক সংগঠন হাসিমুখে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।এবং ভবিষ্যতেও তারা এভাবেই অভাবী মানুষজনের মধ্যে বিনামুল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পৌছে দিতে বদ্ধ পরিকর।