মঙ্গলকোটে তৃণমমূল (TMC) নেতা অসীম দাসের হত্যাকাণ্ডে একাধিক তথ্য উঠে এল সিআইডির হাতে। রবিবার লাখুড়িয়ায় তদন্তে আসেন সিআইডির ডিআইজি স্পেশাল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন, সিআইডির পাঁচ সদস্যের বিশেষ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক সারেন পুলিশ অধিকর্তা।
পুলিশ সূ্ত্রে খবর, মৃত তৃণমূল (TMC) নেতা অসীম দাসের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন ধরেই দলের অন্য সদস্যদের মতবিরোধ দেখা গিয়েছিল। পাশাপাশি, অঞ্চল সভাপতির পদ পরিবর্তন নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। এই নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন অসীম। পাশাপাশি, বালিখাদান থেকে বালিপাচার এবং সেই পাচারের টাকা আত্মসাত্ ও বন্টন নিয়েও বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন অসীম এমনটাই অনুমান গোয়েন্দাদের। তদন্তকারী অফিসারদের আরও অনুমান, বালি পাচার কাণ্ডেও যোগ ছিল নিহত তৃণমূল নেতার। পাচারের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হতে হয়েছে অসীমবাবুকে এমনই অনুমান করছেন গোয়েন্দারা। তবে তদন্ত এখনও জারি রয়েছে।
গত সোমবার, নিজের বাড়ির কাছেই গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন অসীম দাস। তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় অসীম দাসের পরিবারের দাবি ছিল শাসকদলেরই ‘বি-গোষ্ঠী’ এই কাজ করেছে। যদিও, তৃণমূলের (TMC) তরফে বারবার নিশানা করা হয়েছিল বিজেপিকে। কিন্তু বিজেপির তরফে সাফ জানানো হয়, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই মৃত্য়ু। এরপর, সিআইডির হাতে যায় খুনের তদন্তভার। আসরে নামে ফরেনসিক দলও। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানান, খুনি বিজেপির হোক বা অন্য দলের কোনও ক্ষমা করা হবে না। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দোষীকে গ্রেফতার কার হবে বলে জানান অনুব্রত। ঠিক তার পরেরদিনই গ্রেফতার করা হয় লাখুড়িয়ার তৃণমূলের অঞ্চল সহ-সভাপতি শাবুল শেখ-সহ আরও এক কর্মীকে। যদিও, খুনের ঘটনায় তাঁদের কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেন তৃণমূল নেতা শাবুল।
রবিবার, মঙ্গলকোট-কাণ্ডকে কেন্দ্র ফের রাজ্য সরকারকে তোপ দেগেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোশ্য়াল মিডিয়ায় একটি পোস্টে দিলীপ লেখেন, ‘আরবে সমস্ত আতর এনে দিলেও মুখ্য়মন্ত্রীর হাত থেকে রক্তের গন্ধ যাবে না।’ পোস্টের ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতার খুনে ৫ সদস্যের সিট গঠন করে রাজ্য সরকার। অথচ, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর প্রায় ৫০জন বিজেপি কর্মীর নির্মম হত্যা হয়েছে। কিন্তু খেলায় মগ্ন মুখ্যমন্ত্রী এই রক্তবন্যায় আনন্দিত হয়ে ঘটনাগুলি অস্বীকার করেন।’
পাল্টা, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “দিলীপবাবুর এটা অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। তৃণমূলকে গালমন্দ, নিন্দা না করলে কী করে বোঝাবেন তিনি যে এখনও রয়েছেন। এটা আসলে তাঁর এগজ়িস্টেনসের লড়াই।”