মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে ‘ভূত’ ভেবেই জয়শ্রীরাম ধ্বনিতে ভয় পাচ্ছেন

আমার বাড়ির বাঁধুনি অণিমার পাঁচ বছরের নাতনি ফিঙে পড়েছে মহা সমস্যায়। ও নিজের নাম বলতে চাইছে না। বলুন তো দাদা! কী সমস্যা!’ অনিমার দুঃশ্চিন্তা দেখে বলি—“কেন সমস্যাটা কোথায়?
—আর বলবেন না দাদা। ওর নাম জয়শ্রী রায়। তা যেদিন পাড়ার একটা দোকানে গেছে। ওর বাবার সঙ্গে কেক কিনতে। সেখানে এক তৃণমূলি দাদা ওর গালটা টিপে জিজ্ঞেস করেছে—“কী নাম?’ তা নাতনি আমার সবে বলেছে জয় শ্রী রা…। ব্যাস, ধুন্দুমার কাণ্ড। ওই তৃণমূলি ছোকরা তো ফিঙের বাবাকে এই মারে তো সেই মারে! ‘এইসব শেখাচ্ছ? পাঁচ বছরের পুঁচকি মেয়েকে দিয়ে জয় শ্রীরাম বলতে শেখাচ্ছ?
আমার জামাই যত বলে—“নারে বাবা, ওর নাম….’ তা কে কার কথা শোনে। রেগে আগুন…. তেলে বেগুনের অবস্থা। তারপর যা হয়। পাঁচটা লোকের ভিড়। একথা ওকথা থেকে দুচারটে কু কথার আদানপ্রদান। তারপর তো মারপিট লেগে গেল তৃণমূলি আর বিজেপি-র মধ্যে। তা কোনরকমে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বাঁচি আমরা মশাই। তারপর থেকেই ফিঙে আর নিজের নাম বলছে না।
গল্পের মতো শোনালেও ঘটনাটা বাস্তব। এখন অণিমা ভাবছে, ওর নামটাই বদলে দেবে কিনা। সেখানেও তো ফ্যাচাং কম নয়। বার্থ সার্টিফিকেট-টিকেট সব বদলানো কী কম হ্যাপা!
ফিঙের অবস্থা শুনে আমার আমাদের তরুণ বয়সের একটা ঘটনা মনে পক্ষে গেল। তখন আমরা সব সদ্য সদ্য সাংবাদিকতা পেশায় ঢুকেছি। তখন আমাদেরই এক সহকর্মী একদিন একটা টেলিফোন নম্বর দিয়ে বলল—‘ফোনটা করে লক্ষ্মণদাকে চাইবি। বলবি, জেনারেটর ভাড়া চাই। আমি বললাম—মানে? জেনারেটর কী করব?
—আরে কর না ফোনটা।
করলাম।‘লক্ষ্মণদা আছেন?’ বলা মাত্রই মনে হলো কানে কেই গরম সিসা ঢেলে দিয়েছে। ব্যাপরে বাপ! জীবনে অমন গালাগালি শুনিনি। তা সেই লক্ষ্মণদাকে আমরা সাংবাদিকরা কেউই চোখে দেখিনি। চিনতাম না কেউ। কিন্তু যা হয় আর কী! নিতান্তই নিরামিশ আনন্দের জন্য সাংবাদিকদের টেনশন ভরা জীবনে লক্ষ্মণদা ছিলেন আমাদের কাছে গ্রীষ্মের দাবদাহে এক পশলা বৃষ্টির মতো। রাইটার্সে প্রেস কর্নার থেকে গড়পড়তা সবাই ওই লক্ষ্মণদাকে নিয়ে সময় কাটাতো অনেকটা। শেষ পর্যন্ত অবস্থা এমন হলো যে হাওড়া পুলিস সুপার শচীন শ্রীধর আর কলকাতা পুলিসের ডি সি ডি ডি গৌতম মোহন চক্রবর্তীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ওঁরা অনুরোধ করেন—থামুন আপনারা। উনি হাফ ম্যাড ছিলেনই। এবার আপনাদের জন্য না ফুলম্যাড হয়ে যান।
প্রথম জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে পশ্চিমবঙ্গের অনুপ্রেরণাদাত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফায় দফায় প্রতিক্রিয়া দেখে ওই লক্ষ্মণদার কথা ভেসে উঠল স্মৃতির পর্দায়। শুধু আমার নয় –বাংলা সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা কেউ আড়ালে কেউ প্রকাশ্যে হাসাহাসি করছে লক্ষ্মণদার প্রসঙ্গ তুলে। হাসি ঠাট্টা চলছে প্রেস ক্লাবেও সান্ধ্য আসরে। আর সোশ্যাল মিডিয়া ? কত মানুষ যে কত চরিত্রের গল্প শোনাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই।
প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলে একজন লিখছেন—আমরা বাণীপুর হোমের কোয়ার্টারে থাকতাম। তখন নির্মলদা নামে এক প্রাক্তন ছাত্র আসত আমাদের ঘরে চা খেতে। এমনিতে সুস্থ। কিন্তু ‘আয়নায় দাগ লেগেছে’ বললেই উন্মাদ হয়ে যেতেন। ঢিল ছুঁড়তেন। একবার মা চা দিয়ে বললেন, নির্মল, তুমি ‘আয়নায় দাগ লেগেছে’ শুনে খেপে যাও কেন? নির্মলদা একথা শুনেই রেগে চায়ের কাপ উলটে দিয়ে চলে গেলেন।
স্বপন দাস নামে একজন শুনিয়েছেন তার পাড়ার শান্তি পিসির কথা যাঁকে পান্তা পিসি বললেই চটে যেতেন। সঞ্জয় রায়চৌধুরী লিখেছেন তেঁতুল পিসি’, ‘মুরগি চোর’নামের মাহাত্ম্য কাহিনি। আমাদের বন্ধু শৈবাল বিশ্বাস শোনাল বাগবাজারের বিখ্যাত মোহনবাগান বুড়োর গল্প। বয়সের কোনও গাছপাথর ছিল না তাঁর। তীব্র মোহনবাগান ভক্ত। মানে ভদ্রলোকের জগটাই ছিল ফুটবল আর মোহনবাগান নিয়ে। তাকে যদি একবার বলা হতো, ‘মোহনবাগান হেরেছে’– ব্যাস্, সঙ্গে সঙ্গে বজ্রপাত। ছাগল বাচ্চা, তোদের খাইয়ে পরিয়ে রেখেছি এদেশে। আর তোরাই হারাবি মোহনবাগানকে?’ বলে দু-চারটে কাঁচা খিস্তি ইত্যাদি। রজত ভরদ্বাজ মুখার্জি আবার ফেসবুকে বেশ লম্বা চওড়া একটা ভিডিয়ো সেঁটে দিয়েছেন। সেই ভিডিয়োটা এক সত্তরোর্ধ্ব গ্রামীণ বিধবার। তাকে ‘তেষট্টি’ বললেই তিনি অপরপক্ষের চোদ্দগুস্টি উদ্ধার করে ছাড়েন।
এখন আলোচ্য যা তা হলো এ সব ঘটনা থেকে তো বোঝাই যায় যে এঁরা সকলেই মানসিক ব্যাধির শিকার। কোনো একটি ঘটনাচক্রে কিছু ঘটনা বা কিছুশব্দ বা কিছু বাক্য সম্বন্ধে এইসব মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন এবং ধীরে ধীরে তার মনের মধ্যে অকারণেই তৈরি হয় বিদ্বেষ। এবং এই বিদ্বেষ এতটাই তীব্র যে, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হয় নিজের প্রতি ঘৃণায় আত্মহত্যা করতে পারেন অথবা প্রতিপক্ষকে চরম আক্রমণ হানতে পারেন। এবং যাই করুন না কেন, তা করে ফেলেন নিজস্ব বিচারবুদ্ধি এবং মানসিক স্থবিরতার অনুপস্থিতিতে। গোটাটাই অনিচ্ছাকৃত। চিকিৎসা হয় না, কারণ ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তি নিজেই মনে করেন না তিনি কোনও ভুল বা অন্যায় করছেন। সঠিক চিকিৎসা হলে এ ব্যাধি থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি ‘জয় শ্রীরাম’ ধবনি শুনে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী ওই লক্ষ্মণদা, তেষট্টি, বা মোহনবাগান বুড়োর মতো না হলেও, যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন, তা খুব স্বাভাবিক নয়। ঘটনাটি যদি একবার হতো এবং তার পুনরাবৃত্তি না হতো, তাহলে অন্য কথা। কিন্তু ৩/৪ বার একইরকম প্রতিক্রিয়া দেখানোয়, প্রতিপক্ষের কাছে তিনি নিজেই। ব্যঙ্গের শিকার হচ্ছেন। বোঝাই যাচ্ছে, যাঁরা তাকে দেখে ‘জয় শ্রীরাম’ধ্বনি দিচ্ছেন, তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই দিচ্ছেন, যাতে মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে পড়েন। যাতে তিনি গালাগাল দেন। যাতে আবার টেলিভিশন বা সোশ্যাল মিডিয়া সেসব দেখে সাধারণ মানুষও হাসে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কাছে এটা একটা অস্ত্রও। কারণ, উনি যত বেশি এধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, তত বেশি উনি লোকসমক্ষে হেয় হবেন, সম্মান হারাবেন। সবচেয়ে বড় কথা—ভোট হারাবেন।
আর একথাও ঠিক—‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শ্রীরামের জয়গান হোক অথবা রাজনৈতিক স্লোগান, তাতে প্রতিক্রিয়া জানানোর আছেই বা কী?
বিভিন্ন সংবাদপত্র পত্রিকায় বিভিন্নরকম প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ল। বাঙালি কবি ও ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ সুবোধ সরকারের মতামত হলো, ‘রাম কোটি কোটি মানুষের আরাধ্য দেবতা। কিন্তু ২০০২ সালে অর্থাৎ গুজরাত দাঙ্গার সময় থেকেই জয় শ্রীরাম ধ্বনির যে ব্যঞ্জনা, সেটা পুরোপুরি ধর্মীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এই স্লোগান বিশেষ কোনও কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্কের সূচনা করে।’তা বেশ। মেনেই নিলাম এটা ধর্মীয় রাজনীতির স্লোগান।‘জয়। মা কালী’ বলে কোনও রাজনৈতিক ব্যাক্তি বা দল জয়ধ্বনি দেয়, তাহলে অসুবিধা হয় না। জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে আপত্তি কেন? ওটা কি বি জে পি বলে? বি জে পির কাছে আপনার নেত্রী গোহারান হেরেছেন বলে ? আপনার নেত্রীর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়েছে বলে ? কলকাতার মেয়র এবং তৃণমূলের সবচেয়ে বেশি এবং বড় সুবিধাবাদী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আবার বলেছেন, যাঁরা জয় শ্রীরাম বলছেন, তারা হাতে তরবারি নিয়ে ঘুরছেন। তখন মনের মধ্যে ভয় লাগে, গলাটা কাটা যাবে না তো? তাই নাকি? তা কোনও ভিত্তিতেই তো চোখে পড়ল না, তরবারি হাতে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে কেউ জয় শ্রীরাম বলছে। তরবারি তো শুনেছি মহরমের মিছিলে, বকরিদের মিছিলে থাকে। ভয় লাগার কথা তো তাহলে আল্লা হো আকবর ধ্বনিতেই, তাই না? তৃণমূলি শাস্ত্রবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি আবার পণ্ডিতী ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, আসলে ব্যুৎপত্তিগত দিক দিয়ে তিনি-ই রাম, যিনি সকলকে রঞ্জিত করেন, রাঙিয়ে দেন। কিন্তু জয় শ্রীরাম সম্পূর্ণভাবে বিজেপি-র স্লোগান। যদি ভয় দেখানোর জন্য জয় শ্রীরাম ধ্বনি তোলা হয়, তাতে কেউ কেউ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতেই পারেন। ভাদুড়ি মশাইয়ের বক্তব্য ঠিক হৃদয়ঙ্গম হলো না। ভয় দেখানো মানে? কীসের ভয়? কে ভয় পাচ্ছে? উত্তর তো একটাই। ভোটে ফের রাজ্যপাট হারাবার ভয়। তাই তো! তা, প্রতিপক্ষ দরকার হলে সে ভয় তো দেখাতেই পারে, যেমন আপনার প্রিয় নেত্রী জয় শ্রীরাম বললেই জেলে পুরবেন বলে ভয় দেখাচ্ছেন।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায় বলছেন, যা কিছু মনোজ্ঞ ও সুন্দর, সেই অর্থেই রাম শব্দটির ব্যবহার। যেমন, আদর্শভাবে শাসিত মুখশান্তিপূর্ণ রাজ্য রামরাজ্য। এখন আমার নিজের মনের মধ্যে যদি নেতিবাচক ব্যঞ্জনার বীজ লুকিয়ে থাকে বা আমার বিপরীতে যাঁর অবস্থান, আমার শত্র, সে যদি আমায় উৎপীড়ন যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য শব্দটি প্রয়োগ করে, তখন প্রতিক্রিয়া হতেই পারে। শক্তিসাধন বাবুর ব্যাখ্যাটি বেশ যুক্তিসংগত। অর্থাৎ রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিচ্ছেন, তাদের ওই ধ্বনিটা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে উৎপীড়ন বা যন্ত্রণা মনে হচ্ছে, কারন তিনি নিজের মনের মধ্যে রাজ্য সম্বন্ধে নেতিবাচক ব্যঞ্জনার বীজ পোষণ করে রেখেছেন। খুব স্বাভাবিক, সেই মানসিকতা নিয়ে আদর্শভাবে শাসিত সুখশান্তিপূর্ণ রাজ্য রামরাজ্যের সৃষ্টিকর্তার নামে স্লোগান সহ্য করবেন কিভাবে?
বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য ঃ “আমি তো বুঝতেই পারছি না, রাম। নিয়ে রেগে যাওয়ার কী আছে? এই ধ্বনিকে রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে কেউ কেউ দেখতেই পারেন। তবে রাম তো আমাদের আরাধ্য দেবতা, অবতারের নাম। তা নিয়ে। কেউ ধ্বনি তুললে প্রতিক্রিয়া জানানোর কিছু নেই।
কবি শঙ্খ ঘোষ অবশ্য মনে করেন রাম ও জয় শ্রীরাম সম্পূর্ণ আলাদা। জয় শ্রীরাম বিশেষ রাজনৈতিক ধ্বনি। রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু কেউ খেপাতে চাইলে খেপে যাওয়াটা ঠিক নয়। বামপন্থী শিক্ষাবিদ ও লেখক পবিত্র সরকার বলছেন, ‘ভূতের ভয় এড়াতে মানুষ বলে— রাম লক্ষ্মণ বুকে আছে, ভয়টা আমার কী? এখনশাসকের আসনে থাকা একজন মানুষের মনে হতেই পারে রাম শব্দটি তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু পদে পদে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা তাঁর পক্ষেও খারাপ দেখায়।
পাঁচজনের পাঁচ কথা তো শোনা হলো। কিন্তু সব শোনার পরে আমায় এক বাউল বলল, ‘জানেন বাবু, নিত্যানন্দ নাকি কেউ কৃষ্ণনাম করলেই তেড়ে মারতে যেতেন। পাড়ার ছেলেরা তাই ওনাকে দেখলেই হরেকৃষ্ণ বলে চেঁচাত। কেউ একজন পরামর্শ দিয়েছিল নিত্যানন্দকে, ‘তুমি না খেপলেই পার’। নিত্যানন্দ মুচকি হেসে বলেছিলেন ‘ওদের কৃষ্ণনাম করানোর জন্যই তো আমার এই ছল। বাউলের একথার মানে পাঠক আপনি আপনার মতো করে নেন। আমি ওসবে নেই। তবে একটা কথা খুব খিচ খিচ করছে বুকের মধ্যে। রামনামে তো ভয় পায় ভুত। মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে এখন থেকে ভূত (প্রাক্তন) ভাবছেন নাকি। আর সে জন্যই রামনাম বিরোধী এত লম্ফঝম্প ! কে জানে!
সৃজিত রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.