কথায় বলে রাজনীতিতে সময়টাই সব।
সময়ের গুণে বা দোষে বহু ঘটনা বিশেষ মাত্রা পেয়ে যায়।
বুধবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, তখন কলকাতায় মেঘলা আকাশ। ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে। আর সেই আবহাওয়া আবার আপাত ভাবে গরম করে রেখেছে রাজীব কুমার-সিবিআই লুকোচুরি খেলা!
আর এই দুইয়ের সংযোগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন নানা রঙের ঘুড়ি ওড়ানো চলছে আকাশে। কেউ বলছেন, রাজীব কুমারকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। আবার কৈলাস বিজয়বর্গীয় খোঁচা দিয়ে বলছেন, কার প্রাণ ভোমরা রয়েছে রাজীবের মধ্যে?
এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে হলুদ গোলাপ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যে হলুদ গোলাপকে বন্ধুত্বের বার্তা হিসাবেই মনে করা হয়। তার পর বেরিয়ে এসে বলেন, সরকারের সঙ্গে সরকারের আলোচনা হল। সেই সঙ্গে দাবি করেন, রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি মোদীর সঙ্গে। শুধু আলোচনা হয়েছে প্রশাসনিক বিষয়ে। আবার এও জানিয়েছেন, কাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ-র সঙ্গেও দেখা করার সময় চেয়েছেন তিনি।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ হল, সারদা চিটফান্ড প্রসঙ্গ নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেই রেগে গিয়ে বলেছেন, “ডোন্ট আস্ক মি পলিটিক্যাল কোয়শ্চেন!”
প্রায় আড়াই বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা হল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। এর মধ্যে এমনিতে কোনও রহস্য থাকার কথা নয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এ ধরনের বৈঠক ঘন ঘন হবে সেটাই দস্তুর। কিন্তু মোদী-অমিত শাহদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন, তার তুলনায় এ দিনের সুর একেবারেই খাদে বলে মনে করছেন অনেকে। বরং বার্তাটা বন্ধুত্বের। উন্নয়নের প্রশ্ন সহযোগিতার।
যা দেখে বাংলার রাজনীতিতে বিরোধীরা এ দিন কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতাকে। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, উনি সেটিং করতে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, রাজীব কুমারকে ধরলে ধরুন। কিন্তু আমাদের ধরবেন না। মানে পিসি-ভাইপো-কে যাতে বাঁচিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। যা শুনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা তো আমার একার ব্যাপার নয়। আপনি অমিত শাহ-র সঙ্গে কথা বলুন।
মোদী-মমতার বৈঠক নিয়ে এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে অবশ্য বিশেষ কিছু জানানো হয়নি। শুধু দু’জনের সাক্ষাতের ছবিটা টুইট করে দেওয়া হয়েছে। আর এদিকে কলকাতায় সন্ধ্যাতেও দেখা গিয়েছে, সিবিআই দফতরে তৎপরতা। কখনও অফিসাররা সিজিও কমপ্লেক্সের অফিস থেকে নিজাম প্যালেসে আসছেন। কখনও বা আবার নিজাম থেকে সিজিও-তে যাচ্ছেন।