লাগাতার কর্মবিরতি। শিকেয় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা। এই অবস্থায় একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক ডাকলেও সেখানে উপস্থিত হননি আন্দোলনকারী ডাক্তাররা। উলটে একের পর এক শর্ত চাপিয়ে গিয়েছে আন্দোলনকারী ডাক্তাররা। এই অবস্থায় ফের একবার জট কাটাতে উদ্যোগী হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ সোমবার ফের একবার বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আজ দুপুর তিনটের সময় এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, আন্দোলনকারী ডাক্তারদের সমস্ত দাবি মেনে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ১৪টি মেডিক্যাল কলেজ থেকেই জুনিয়র চিকিত্সকদের প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছে। বৈঠকে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিত্সদের দু’জন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
এই বৈঠকে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি সিনিয়র বেশ কয়েকজন ডাক্তারও উপস্থিত থাকতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এই বৈঠকে কি হয় সেদিকেই তাকিয়ে গোটা রাজ্যের মানুষ। প্রশাসন মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রী-আন্দোলনকারীদের মধ্যে এই বৈঠকের পরেই হয়তো সব সমস্যার সমধান হবে। এমনকি এদিন বিকেলের পর থেকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ। সেই মতো তোরজোড়ও শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আলোচনার পথ খুললেও বৈঠকে আন্দোলনকারি জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বাড়ছিল জটিলতা৷ জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের পাঁচজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকুক৷ কিন্তু তাতে প্রথমদিকে রাজি ছিল না নবান্ন৷ যা নিয়ে অব্যাহত ছিল আন্দোলনকারী ও রাজ্য প্রশাসনের চাপানউতোর৷ শেষমেশ আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে রাজ্য প্রশাসনের তরফে আন্দোলনকারীদের জানানো হয় যে, পাঁচজন নয়, দুজন করে প্রতিনিধি থাকবে। জানা যায়, ফের নতুন দীর্ঘ আলোচনায় বসে আন্দোলনকারীরা। আলোচনা শেষে সরকারের এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় তাঁরা।
আলোচনার জন্য জায়গা নির্ধানণের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর উপরই ছেড়ে দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা৷ সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে আন্দোলনকারীদের কাছে নবান্নের সভাঘরেই আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয় সরকারের তরফে৷ তাতে আন্দোলনকারীরা রাজি হন বলে জানা যায়। বৈঠকে সাংবাদিকদের থাকার কথা আন্দোলনকারীদের তরফে বলা হলেও তা অবশ্য মেনে নেয়নি সরকার। রাজ্যের দাবি, কোনও প্রশাসনিক মিটিং সাংবাদিকদের সামনে এভাবে ভিডিও করে দেখানো যায়না। এক্ষেত্রেও তা হবে না। এরপর আন্দোলনকারীদের তরফে পুরো মিটিং ভিডিওগ্রাফী করার দাবি জানানো হয়। তা অবশ্য মেনে নেয় সরকার।
ফলে সমস্ত জট কাটিয়ে অবশেষে আজ বৈঠকে বসছে আন্দোলনকারী ডাক্তার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষমেশ এই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিকমহল। ইতিমধ্যে আন্দোলনকারীদের সমস্ত দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। পর্যাপ্ত নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে সমস্ত হাসপাতালে। ফলে এই মিটিংয়ে আরও দাবি তাঁরা সরকারের কাছে জানতে পারে সেটাই এখন দেখার।