সীতাকে কী বলে সম্বোধন করেন রামচন্দ্র? জানিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভগবান রামকে বিজেপি নির্বাচনের হাতিয়ার করছে বলে ইদানীং বারবার অভিযোগ করেছেন দিদি। সেই প্রসঙ্গেই বুধবার পুরুলিয়ার কোটশিলার জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইলেকশন এলেই রামচন্দ্র সীতামাইয়াকে ডাকে। ডেকে বলে, সীতা মা সীতা মা আমার মনে হচ্ছে ভারতবর্ষে ভোট এসে গেছে। তখন সীতা বলে, কেন ? কেন? তখন রাম বলে, দেখছো না বিজেপি আমার স্মরণ করছে। পাঁচ বছর করে না। ভোট এলেই রামনাম সত্য হ্যায় আর রামনাম জিন্দাবাদ করে।”
এ দিন পুরুলিয়ার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসীদের উদ্দেশে বলেন, “বলুন আদিবাসী মা বোনেরা আমার। আপনারা মারাংবুরু ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে দেবেন? তাহলে আমি কেন দেব? আমি মা দুর্গা, মা কালী, মা লক্ষ্মী, শিব—সব দেবতার ভক্ত। কিন্তু বিজেপি ধর্ম বেচে রাজনীতি করতে চাইছে। বাংলায় এটা আমি বরদাস্ত করব না।”
তবে দিনের শেষে অতীতের ‘বিষ্ণুমাতার’ মতোই সীতাকে রামচন্দ্রের মা বলে সম্বোধন করা নিয়েই হই হই পড়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এক বিজেপি নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর চোখেমুখে দুশ্চিন্তা স্পষ্ট। তাই রাম আর রামকৃষ্ণ গুলিয়ে ফেলেছেন।” তাঁর কথায়, “ঠাকুর শ্রী শ্রী রাম কৃষ্ণ সারদামাকে মা বলে সম্বধন করতেন বলে শুনেছি। কিন্তু রামচন্দ্র সীতাকে সীতা মা বলে ডাকেন এটা শুনিনি।”
সম্প্রতি চন্দ্রকোণায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে কয়েকজন বিজেপি কর্মীর ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে কম হইচই হয়নি। গাড়ি থেকে নেমে পড়েছিলেন মমতা। কার্যত তাড়া করার মতো করে ওই যুবকদের দিকে এগিয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আয় না আয়, পালাচ্ছিস কেন?” এরপর তিন বিজেপি-কে কর্মীকে আটকও করে পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই ঘটনা নিয়ে বাংলায় এসে দিদির বিরুদ্ধে তোপ দেগে গিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেন, “দিদি, আমি জয়শ্রীরাম বলছি। পারলে আমায় জেলে ঢোকান।”
এ দিন ফের বিজেপি-র বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ তোলেন মমতা। আদিবাসী অধ্যুষিত পুরুলিয়ায় দাঁড়িয়ে বলেন, “ওরা আদিবাসী আর মাহাতোদের মধ্যে ঝগড়া লাগাতে চাইছে। আমি এটা হতে দেব না। আদিবাসীদের জমি কাড়তে চায়। ঝাড়খণ্ডে জমি কেড়েছিল। আমি লোক পাঠিয়ে আটকেছি।”