১৯শেই ফিনিশ, দিদির স্লোগান হল বুমেরাং#ELECTIONRESULTS2019

‘গণতন্ত্রের থাপ্পড়’ হারে হারে টের পেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ বলেছিলেন বাংলায় ৪২-এ ৪২ পাবে তৃণমূল৷ বাস্তবে বল অন্য৷ পাঁচ বছরেই বিজেপির আসন ২ থেকে বেড়ে দু অঙ্কে৷

মোদী-মমতা প্রচারে উত্তপ্ত হয়েছে বাংলা৷ একে অপরকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করেছেন৷ তাদের স্লোগান যুদ্ধ কর্মী, সমর্থকদের মুখে মুখে ফিরেছে৷ প্রচারে ঝড় তুলেছে৷ কিন্তু সেই স্লোগানই বুমেরাং হল তৃণমূল নেত্রীর কাছে৷

রাজ্যে গেরুয়া হাওয়া ছিল৷ বুঝেছিলেন দূরদর্শী মমতা৷ তাই রাজ্য চষে ফেলেছিলেন প্রচারে৷ বাংলায় এসে দিদিকে ‘উন্নয়নের স্পিড ব্রেকার’ বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ জবাবে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘মোদীকে গণতন্ত্রের থাপ্পড় মারা উচিত৷’’ একজন মুখ্যমন্ত্রীর কী এই ধরণের ভাষা প্রয়োগ করতে পারেন? বিতর্ক হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে৷

পরে রাজ্যের বুকেও মোদীর প্রচারে উঠে আসে ‘থাপ্পড়’ প্রসঙ্গ৷ বলেছিলেন, ‘দিদি এবার লাড্ডু পাবেন৷ তাই আমার বিরুদ্ধে এত রাগ৷’ তৃণমূল নেত্রী পালটা বলেন, ‘এবার আর ক্ষমতায় ফিরবেন না মোদী৷ তাই ওদের মাটির লাড্ডু দেব৷ যার ভিতরে থাকবে কাঁকর৷’

এখানেই শেষ নয়৷ উঠতে বসতে মোদীকে ব্যক্তিগত আক্রমণও করেছেন মমতা৷ যশোদাবেনের নাম তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘যে নিজের স্ত্রীকে স্বীকৃতি দিতে ব্যর্থ তিনি কীভাবে দেশ চালাবেন৷’’ এই মন্তব্যের পর মমতার বিরুদ্ধে কমিশনে যাওয়ার চিন্তা করেছিল বাংলার বিজেপি নেতারা৷

কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে স্বৈরাচারী বলে অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী৷ কেন্দ্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে৷ মমতা আওয়াজ তুলেছিলেন, ‘‘১৯ – মোদী ফিনিশ৷’’ কিন্তু বাস্তবে হল উলটো৷ পোক্ত হল বিজেপি৷ দেশের ৩০০-র বেশ কিছুটা বেশি আসন পেয়ে ফের সরকার গড়ার পথে নরেন্দ্র মোদী৷

মমতার চড়া সুরের সঙ্গেই যোগ হয়েছিল আট বছরের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের অসন্তোষ৷ পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের উপর হিংসা সহ সিন্ডিকেটরাজ, বাহুবলীদের কার্যকলাপ, শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য, কর্ম সংস্থানের বিষয়গুলি৷ অন্যরাজ্যেও বিরোধী জোটের অবস্থা বেশ শোচনীয়৷

আশাতীত নয় হাত শিবিরের পারফরমেন্স৷ বুয়া-বাবুয়া জুটিও ফ্লপ৷ চন্দ্রবাবু, কুমারস্বামী থেকে কেজরীওয়াল-সবাকে যেন দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া ভার৷ প্রবণতা বলছে ফল খারাপ হয়েছে তৃণমূলেরও৷ ফলে ‘১৯শে – বিজেপি ফিনিশ’ স্লোগানই যেন ব্যাকফায়ার হল জোড়াফুল শিবিরের ক্ষেত্রে৷

গ্রাফিক্স: মিতুল দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.