ক’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদী এক সাক্ষাৎকারে একটা ‘মিষ্টি’ কথা ফাঁস করে দিয়েছিলেন। উনিশের ভোট প্রচার এখন মধ্যগগনে। মোদী-মমতা শঠে শাঠ্যং চলছে। তার মাঝেই মোদী জানিয়েছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বেছে আমার জন্য কুর্তা পাঠান। বছরে তিন-চার বার মিষ্টিও পাঠান।’’

আজ বুধবার, রাজনীতির হেঁশেলের আরও এক কথা ফাঁস করে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা নিতিন গডকড়ী।  এ দিন এক সাক্ষাৎকারে গডকড়ী বলেন, ‘একবার আমি কলকাতায় গিয়েছি, সে বার তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার জন্য মাছ রান্না করে এনেছিলেন। বললেন, আমি নিজে রান্না করেছি। কিন্তু আমি তো শুদ্ধ শাকাহারী। তাই শুধু দই-ভাত খেয়েছিলাম।’ গডকড়ী আরও বলেন, নেতাদের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে রাজনীতির বাতাবরণ অনেক ভালো হতে পারে।

ভোট-মরসুমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিধানে অবশ্য এ সব সৌজন্যের কোনও জায়গা নেই। তিনি নিজেই বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তখন যা করেছি, করেছি। মোদীকে এখন মাটির রসগোল্লা বানিয়ে দেবো, তার মধ্যে পাথর গুঁজে দেবো। খেতে গিয়ে দাঁত ভেঙে যাবে। তাতে মোদী আবার হেসে বলেছেন, বাংলার মাটির তৈরি রসগোল্লা সে তো প্রসাদ আমার কাছে! গতকাল আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, মোদীকে আমি গণতন্ত্রের থাপ্পড় মারতে চাই।

অনেকে মনে করছেন, মমতা যখন মোদীর সম্পর্কে এতটাই রুক্ষ মন্তব্য করছেন, তখন ইচ্ছা করেই বিজেপি শিবির পুরনো দহরম-মহরমের কথা ফাঁস করে দিচ্ছে এবং কৌশলে বাংলার ভোটারদের কাছে এই বার্তা দিতে চাইছে, দিদি বাইরে একরকম, ভিতরে আর একরকম। তবে, এ ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অবশ্য খুবই সোজাসাপটা। মমতা গতকাল থাপ্পড় মারার কথা বলার পর, সুষমা টুইট করে বলেছেন, ‘‘মমতাজি সবরকম সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছেন। রাজনীতিতে বিরোধিতা করা ভালো, কিন্তু এতটাও নয় যে পরে মুখোমুখি হলে লজ্জা পেতে হবে।’’

সুষমার সে কথার প্রসঙ্গ টেনেই বাংলা বিজেপির এক নেতা আজ বলেন, বিদেশ মন্ত্রী ঠিকই তো বলেছেন। এরপরে মমতা যখন ফের মিষ্টি ও মাছ নিয়ে যাবেন, তখন লজ্জা লাগবে না যে আগে কী কথা বলেছি!

তৃণমূলে যাঁরা মমতাকে খুব কাছ থেকে চেনেন তাঁদের অবশ্য বক্তব্য, দিদি এমনই। রাজনীতির জন্য, বাংলার জন্য যখন যেমন দরকার, দিদি তখন তেমনটাই করেছেন। কখনও তিনি মুঠো ভরে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্য চকোলেট নিয়ে গেছেন, আবার কখনও বা প্রকাশ্যে বা আড়ালে মু্ণ্ডপাত করেছেন। প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হলে, সবার আগে আপত্তি করেছিলেন মমতাই। দিদির কাছে রাজনীতিটা আসলে যুদ্ধ। এবং ভালোবাসা আর যুদ্ধে সবই চলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.