ক’দিন আগে দলের বৈঠক থেকে তিনি পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিয়েছিলেন, সরকারি প্রকল্প থেকে কোনও কাটমানি নেওয়া যাবে না। এ বার মন্ত্রী, বিধায়কদের ভাতা এক ধাক্কায় তিরিশ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিধানসভায় এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি জানান, মন্ত্রীরা এতদিন দৈনিক যে ২ হাজার টাকা ভাতা পেতেন তা বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হবে। অর্থাৎ মন্ত্রীদের মাসিক ভাতা তিরিশ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়াবে নব্বই হাজার টাকা। একই ভাবে বিধায়কদের দৈনিক ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হবে ২ হাজার টাকা। মানে বিধায়কদের মাসিক ভাতা তিরিশ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হবে ষাট হাজার টাকা। তবে কবে থেকে বর্ধিত ভাতা দেওয়া হবে তা মুখ্যমন্ত্রী এ দিন স্পষ্ট করেননি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাটুকুই যথেষ্ট ছিল। দল নির্বিশেষে বিভেদ মুছে গিয়ে বিধায়করা এ দিন টেবিল চাপড়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
বস্তুত গোটা দেশের বহু রাজ্যের তুলনায় বাংলার মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন ও ভাতা অনেকটাই কম। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বিধায়কদের সৎ পথে থাকার জন্য বেতন ও ভাতা দুটোই বাড়ানো উচিত। কারণ, একেক জন বিধায়কদের বাড়িতে রোজ এলাকার যে সংখ্যক মানুষ সমস্যা নিয়ে যান, তাঁদের এক কাপ চা আর বিস্কুট খাওয়াতেই মাসে প্রচুর টাকা খরচ হয়। তার পর এর চিকিৎসার টাকা প্রয়োজন, ওঁর মেয়ের বিয়ে, তাঁর ছেলের পড়ার খরচ — এই সব সামাজিক দাবি দাওয়া থাকেই। তা থেকে কোনও বিধায়কই মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেন না।
বাংলায় মুখ্যমন্ত্রীর মূল বেতন হল ২৭০০১ টাকা। সেই সঙ্গে এ বার থেকে তিনি ভাতা হিসাবে ৯০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। ফলে মোটামুটি ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বেতন হবে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ১ টাকা। পূর্ণ মন্ত্রীরা বেতন ও ভাতা মিলিয়ে পাবেন ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। প্রতিমন্ত্রীরা বেতন ও ভাতা মিলিয়ে পাবেন ১ লক্ষ ১১ হাজার ন’শো টাকা। এবং বিধায়করা বেতন ও ভাতা মিলিয়ে পাবেন মোট ৮১ হাজার ৮৭০ টাকা।