রাজারহাটে জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টার করার জন্য সিপিএমকে জমি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ওই জমির কাগজপত্র সিপিএম নেতা রবীন দেবের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জ্যোতি বসু সেন্টার ফর স্টাডিজ এবং রিসার্চ -এর জমির দখলদারিত্ব চাইতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছে সিপিএম জুন মাসে।
সিপিএমের তিন নেতা – সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব এবং অশোক ভট্টাচার্য মমতাকে জানিয়েছিলেন, টাকা দেওয়া সত্ত্বেও জমির পজেশন বা দখলদারি পাওয়া যায়নি৷ বরং নিউটাউনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিডকো সিপিএম-কে অন্য জমি দিতে চেয়েছে৷ সিপিএমের বক্তব্য ছিল, মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি শুনে বলেছেন, সিপিএম যে জমি চাইছে, সেই জমিতে কিছু বিতর্কিত বিষয় বা ‘ডিসপুট’রয়েছে৷ দেখতে হবে৷ পরে অবশ্য সিপিএম রাজি না হওয়ায় ওই জমিটিই দিয়ে দেয় রাজ্য সরকার।
সিপিএমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে নিউটাউনে হিডকো এই জমি বরাদ্দ করে৷ ২০১১ সালের ১২ মে সমস্থ টাকা হিডকো-কে দিয়ে দেওয়া হয়েছে পার্টির তরফে৷ কিন্ত, রাস্তার পাশে, ওই পাঁচ একর জমির দখলদারিত্ব সিপিএম পায়নি৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ২ মাসের মধ্যেই এই জমি পাওয়া গিয়েছে। মনে রাখা প্রয়োজন, ২০১১ সালের ২০ মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠন করে৷ তবে সরকার গঠনের আগেই ২০১১ সালের ১২ মে সমস্থ টাকা হিডকো-কে দিয়ে দেওয়া হয়েছে, দাবি করে সিপিএম৷
পালটা অভিযোগও উঠেছিল, যে জমি সিপিএম কিনতে চেয়েছে, হিডকো তা দিতে এখন দিতে পারছে না৷ তবে সিপিএম যে জমি চেয়েছিল, সেই জমি তাঁদের দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়েছেন মুখমন্ত্রী – মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণটাও স্পষ্ট, লোকসভা নির্বাচনের সিপিএমের ভোট গিয়ে পড়েছে বিজেপিতে। রাজ্যে ১৮টি আসন পেয়ে তৃনমূল কংগ্রেসকে কোণঠাসা করেছে বিজেপি।
সেক্ষেত্রে মমতার মূল শত্রু এখন আর সিপিএম নেই, বরং বিজেপি। প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, জ্যোতি বসু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। রাজনীতিতে অবদান রয়েছে। তাঁর রিসার্চ সেন্টার হবে তাতে অসুবিধার কিছু নেই। কিন্তু প্রশ্ন, এতদিন কেন হলো না? আর এখনই কেন হলো?