কী বলা যায় একে?
অনেকে বলছেন ড্যামেজ কন্ট্রোল।
বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ বা এনআরসি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। মমতার বক্তব্য ছিল, “ওটা তো অসমের ব্যাপার!” তারপর তৃণমূলের অন্দরেই এনআরসি ইস্যুতে দলগত অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না। তার আগেই এনআরসি ইস্যুতে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টায় নামলেন মমতা।
বৃহস্পতিবার নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে মমতা বলেন, “এনআরসি নিয়ে চিঠি দিয়েছি। বলেছি, বহু বাংলা ও হিন্দিভাষী মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বহু হিন্দু, মুসলিম ও গোর্খার নাম। এটা ঠিক নয়। যাঁরা প্রকৃত ভারতীয় তাঁদের নাম যেন তালিকায় থাকে।”
গত বৃহস্পতিবার এই ইস্যুতে সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পদযাত্রা করেছিলেন মমতা। তোপ দেগেছিলেন দিদি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, এনআরসির মাধ্যমে বাংলা থেকে দু’কোটি মানুষকে তাড়ানো হবে। এর জবাবে মমতা পাল্টা হুঁশিয়ারিতে বলেন, দু’কোটি তো পরের কথা, আগে বাংলার দু’জন মানুষের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক!
গত বছর এনআরসি-র শুরুর সময়েই প্রতিনিধি দলকে অসমে পাঠিয়েছিলেন মমতা। তাঁদের ঢুকতে না দেওয়ায় দিল্লি গিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এর কাছে। কিন্তু কাল মমতার ‘ওটা তো অসমের ব্যাপার’ মন্তব্যে অনেকেই নরম মনোভাব দেখেছিলেন। দলের ভিতরেও অনেকে বলতে শুরু করেছিলেন, এই রকম একটা স্পর্শকাতর ইস্যুতে দুম করে অবস্থান বদল করলে মুশকিল। কারণ বাংলার উদ্বাস্তু কলোনিগুলিতে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এনআরসি আতঙ্ক। পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বুঝতে পেরেই কালকের এনআরসি ক্ষততে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, কর্মীদের কাছে দলগত অবস্থান পরিষ্কার থাকবে তো?