পানাজির সভা মঞ্চ থেকে গোয়াবাসীর জন্য প্রথমবারের মত কয়েক লাইন চণ্ডীপাঠ করে শোনালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, গোটা বইটাই তাঁর মুখস্থ। সারা বছর তিনি এটা পাঠ করেন, শুধু ভোট এলেই নয়। ধর্মের অস্ত্রে বিজেপিকে আক্রমণ করতে ছাড়লেন না মমতা। গতকাল কাশীতে মোদীর গঙ্গাস্নান নিয়েও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
মমতার গোয়া সফরের দ্বিতীয় দিন আজ। রাজনৈতিক সঙ্গী মহারাষ্ট্রবাদী গোমান্তক পার্টি বা এমজিপি-কে সঙ্গে নিয়েই এ দিন পানাজি থেকে সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এ দিন মঞ্চ থেকে ধর্মের কথা তুলে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মমতা।
গতকাল কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধনে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ললিতা ঘাটে গঙ্গায় ডুব দিয়ে তারপরই বিশ্বনাথের পুজো করেন মোদী। গোটা দেশ জুড়ে পালিত হয় ‘দিব্য কাশী ভব্য কাশী’। মন্দিরে মন্দিরে পুজো দেন বিজেপি নেতারা। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে নাম না করে মমতা বলেন, ‘ভোট এলেই গঙ্গায় ডুব দেয়, ভোট এলে উত্তরাখণ্ডের মন্দিরে গিয়ে বসে থাকে। আর করোনার সময় সেই গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসিয়ে দেয়। গঙ্গাকে অপবিত্র করে।’ বিজেপির কাছ থেকে যে তাঁকে ধর্মের পাঠ শিখতে হবে না, সে কথা উল্লেখ করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘আমি নিজে একজন ব্রাহ্মণ, বিজেপির কাছ থেকে সার্টিফিকেট পাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আমার বাড়িতে কালী পুজো হয়। আমরা দুর্গা পুজো করি, জগদ্ধাত্রী পুজো করি।’
সেই সঙ্গে মমতার চেনা কন্ঠে চণ্ডীপাঠ শোনা যায় এ দিন। কয়েক লাইন বলেই মমতা জানান, তিনি সারা বছর এই বই পাঠ করেন। গোটা বইটাই তাঁর মুখস্থ। শুধু ভোট এলে ধর্মের স্তুতি করবেন, এমন তিনি নন। পাশাপাশি দুর্গা পুজোয় ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও বলেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমি ৫০ হাজার টাকা করে দিই, বিজেপি দেয়?’ তবে মমতার কথায় সংখ্যালঘুরাও মানুষ, তাঁদের দূরে সরিয়ে দেওয়া উচিৎ নয়। ইদে বা বড়দিনেও তিনি যে সমানভাবে অংশ নেন, সে কথাও জানান তৃণমূল নেত্রী।
আগামী বছরেই গোয়ার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে সংগঠন সাজাতেই পরপর দুবার সে রাজ্যে গেলেন মমতা। বিজেপিকে উৎখাত করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। গতকালই তিনি বার্তা দিয়েছেন, ভোট ভাগাভাগি করতে নয়, ভোট ঐক্যবদ্ধ করতে গোয়ায় এসেছে তৃণমূল। তাঁর দাবি, বিজেপির বিকল্প শক্তি হতে পারে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূলি জোট।