দলের চাপ?
বুধবারের ‘রামকথা’ বাতিল করে দিলেন প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। সব প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু হঠাৎ ‘রামকথা’র আগের দিন তাঁর মনে হয়েছে, এটা একেবারেই ঠিক কাজ হবে না। তাই বাতিল। সংবাদমাধ্যমকে মদন জানিয়ে দিয়েছেন, স্থগিত রাখছেন ‘রামকথা।’
তিনি বলেন, “যে দিন জয় শ্রীরাম বলে খুন খারাপি বন্ধ হবে, সে দিন রামকথা হবে। আমি যদি এখন রামকথা করি, তাহলে ওই হিংসার রাজনীতিকেই মদত দেওয়া হবে। তাই আমি ঠিক করেছি মা-মাটি-মানুষের পুজো করব।” তবে কবে হবে মা-মাটি-মানুষের পুজো তা অবশ্য খোলসা করেননি মদন।
লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর ভোট কৌশলী ডেকে এনেছে তৃণমূল। চোদ্দর ভোটে মোদীর মেন্টর প্রশান্ত কিশোরই এখন স্ট্র্যাটেজি বলে দিচ্ছেন তৃণমূলকে। সেই মতো পা ফেলছে বাংলার শাসকদল। তিনিই তৃণমূলকে পইপই করে বুঝিয়েছেন, ধর্মীয় বৃত্তের মধ্যে রাজনীতিকে ঢোকালে হবে না। দেখা গিয়েছে একুশের মঞ্চেও দিদি একবারও আল্লহর নাম নেননি। উচ্চারণ করেননি ওঁ সর্বমঙ্গলা মঙ্গল্যেও। তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, মদন কি তাহলে প্রশান্ত কিশোরের কথাও শুনছেন না?
সূত্রের খবর, তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকেই মদনকে ‘রামকথা’ বন্ধ করতে হয়েছে। মদন এ দিন বলেন, “ যা করব দলের সঙ্গে কথা বলেই করব।” তিনি এ-ও বলেন, “এই অনুষ্ঠান আমি দলকে জানিয়ে আয়োজন করিনি।”
কদিন আগে ফেসবুক লাইভে এসে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেছিলেন, “আমি এখন একটা চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি।” বোঝাতে চেয়েছিলেন, অনেক রাস্তা খোলা তাঁর সামনে। ভাটপাড়ায় হারের পর ফেসবুক লাইভে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়দের নাম করে মদন বলেছিলেন, “অনেকের নাম থাকলেও, আমাকেই শুধু সিবিআই বলির পাঁঠা করেছে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কারা দফতরকে সরাসরি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন মদন। বলেছিলেন, “মাওবাদী ছত্রধর মাহাতোকে প্যারলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমায় দেওয়া হয়নি। আমি তৎকালীন কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফিকে ৪৩টি আবেদন করেছিলাম। সবগুলো চেপে দেওয়া হয়েছিল।” আক্ষেপের সুরে মদন বলেছিলেন, “সেই সময়ে যদি আমায় ৫ দিনের জন্য প্যারোল দেওয়া হতো, তাহলে ১৬-র ভোটে আমায় কামারহাটিতে হারতে হতো না।”
সব কিছুর পরেও দিদির পাড়াতেই মদনের ‘রামকথা’ অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল তৃণমূলকে। তবে আপাতত সেই অস্বস্তির অবসান নিজেই ঘটালেন মদন।