হিন্দি ভালো বলতে পারেন না মদন মিত্র। কামারহাটির বিধায়ক ছিলেন। কিন্তু, বিধানসভার আয়তনের বিচারে সেখানে হিন্দিভাষীর সংখ্যা ছিল একটা নির্দিষ্ট অংশে। কিন্তু ভাটপাড়ার পরিস্থিতিটা আলাদা। এই অঞ্চল কংগ্রেস, বাম এবং পরে তৃণমূলের প্রশ্রয়ে ছোট বিহার হয়ে উঠেছে। সেখানে ভালো হিন্দি বলতে না-পারায় বাসিন্দাদের মনে দাগ কাটতে পারছেন না-বলেই ধারণা হয়েছে মদনবাবুর। সেই কারণে সত্তর ছুঁইছুঁই মদন মিত্র এখন প্রায় প্রতিদিনই হিন্দি বলার চেষ্টা করছেন। সেই চেষ্টা, সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারও করছেন।
বৃহস্পতিবার ছিল তাঁর সেই হিন্দি পরীক্ষার দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে নৈহাটির সভায় মদন মিত্র সেই চেষ্টার কসুর করেননি। তবে, সেই মঞ্চে একটাই হিন্দি বাক্য তিনি ভালো করে বলতে পেরেছেন। সত্তরের বলিউডে যে বাক্যটা বচ্চন-জমানার সৌজন্যে প্রায়ই শোনা যেত- ‘আপনা গলি মে তো কুত্তে ভি শ্যের হ্যায়।’ অবশ্যই সেটা ব্যারাকপুরের নবনির্বাচিত সাংসদ অর্জুন সিংকে উদ্দেশ্য করে।
তার পর যথারীতি ‘বাংলায় ফিরে এসো বাবা’ গোছের কায়দায় সভায় তিনি অর্জুন সিংয়ের উদ্দেশে বলেন. ‘আমি ভবানীপুরের মদন মিত্র। পারলে আমার সঙ্গে ভবানীপুরে এসে লড়।’ ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছেন মদন মিত্র। কিন্তু, ছেলে পবনের বিরুদ্ধে সেই লড়াইটা বকলমে লড়েছেন অর্জুন সিং। তাই সভায় মদনের তোপ ছিল অর্জুনের বিরুদ্ধেই। তিনি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক, সভায় সেকথা বোঝাতেও চেষ্টার কসুর করেননি প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। কীভাবে অর্জুন সিংয়ের গুন্ডাবাহিনীর পরোয়া না-করে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে তিনি ভাটপাড়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেষ্টা করেছেন, সভায় তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন মদন। চারপাশ থেকে তাঁকে ঘিরে ফেলতে পারত অর্জুন বাহিনী, তা উপেক্ষা করেও তিনি কীভাবে কাঁকিনাড়া চত্বরে ঘুরে বেরিয়েছেন, সভায় তা-ও তুলে ধরার চেষ্টা করেন এই প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। মাইকে যা শুনে, নৈহাটিতে নিজেদের পার্টি অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা জনা দুই সিপিএম কর্মী নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘অর্জুন না-মদন, কে বড় গুন্ডা, তা জেনে আমরা কী করব? পুলিশ দিয়ে এলাকায় কেন শান্তি ফেরাতে পারছ না, সেটা বল।’ আর এটাই যেন এখন গোটা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বাসিন্দাদের মনের কথা।
………………………………………………………………………..
দেখুন ভিডিও