মঙ্গলবারই রাজ্যে সব রেকর্ড ভেঙে একদিনে মৃতের সংখ্যা সর্বাধিক হয়েছে৷ মারা গিয়েছেন ২৫ জন৷ এর ফলে বাংলায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮০৪৷ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যাটা ৮৫০ জন৷ এ সব দেখে রাজ্যে সব কন্টেনমেন্ট জোনে ফের লকডাউন লাগু করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার৷
আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে কন্টেনমেন্ট জোনগুলিতে কড়া লকডাউন ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এই মর্মে এদিন নির্দেশিকা জারিও করেছে নবান্ন(Nabanna)। রাজ্যের সব কন্টেনমেন্ট জোনে সব সরকারি এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। চলবে না গাড়ি। কল-কারখানা, মার্কেট কমপ্লেক্স, ব্যবসা বাণিজ্যেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় মিলবে। ওই এলাকাগুলিতে যাতে নিয়ম মানা হয়, সে কারণে পুলিশ এবং প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকবে ২৪ ঘণ্টা৷
কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জোনের মধ্যে রয়েছে ভবানীপুর, উল্টোডাঙা, বেলেঘাটা, ফুলবাগান, আলিপুর, হিডকো, কাকুরগাছি, বিজয়গড়, যাদবপুর, নিউ আলিপুর, কসবা, মুকুন্দপুর, অজয়নগর৷ এই সব এলাকাগুলিতে প্রয়োজনে রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস যাতে পান বাসিন্দারা, তার বন্দোবস্ত করবে প্রশাসন।
করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এদিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় কড়া লকডাউন জারির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল নবান্নে৷ মহকুমা এবং কমিশনারেট মিলিয়ে ৫ জায়গা চিহ্নিত করেছিল জেলা প্রশাসন। সেগুলো হল, বারাকপুর, বনগাঁ, বসিরহাট, বারসাত এবং বিধাননগর। ১৪ দিনের লকডাউনের প্রস্তাব নবান্নে পাঠানো হয়েছিল৷
কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জেলা প্রশাসন ফের লকডাউনের বিষয়ে নবান্নে রিপোর্ট পাঠায়। এ বিষয়ে পর্যালোচনার পর মঙ্গলবারই কন্টেনমেন্ট জোনগুলিতে কড়া লকডাউনের বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইতিমধ্যে কলকাতায় বেশ কয়েকটি এলাকায় লকডাউনের বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে বহুতল। বিভিন্ন রাস্তায় নতুন করে ব্যারিকেডও বসেছে। কড়া লকডাউন জারির জন্য কলকাতার পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে এদিন জরুরি বৈঠক করেন পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম।
উত্তর ২৪ পরগনার পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব মহকুমা এলাকাতেই কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে। সেই সব কনন্টেমেন্ট জোনে জারি হবে ফের লকডাউন৷ সবচেয়ে বেশি কনন্টেমেন্ট জোন রয়েছে আলিপুর সদর মহকুমা এলাকায়৷ কারণ এই মহকুমার অধিকাংশ এলাকা কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায়৷ এর মধ্যে রয়েছে বিষ্ণুপুর বিধানসভা এলাকার আমগাছিয়া, কন্যানগর গভর্নমেন্ট কলোনি, ঘোষেরহাট, দক্ষিণ গৌরীপুর, আশুতি রথতলা, কয়াল পাড়া, খাসিটিকা, নন্দভাঙা-নস্করপাড়া, মল্লিকপাড়া, দৌলাপুর শেখপাড়া, রামনগর মণ্ডলপাড়া, চক এনায়েতপুর, উদয়রামপুর, মীরপুর৷
এ ছাড়া বারুইপুর মহকুমার রাজপুর সোনারপুর, বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার ও জয়নগর মজিলপুর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডেও রয়েছে প্রচুর কন্টেনমেন্ট জোন। এ ছাড়া ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ফলতা, মগরাহাট ১ ও ২, কুলপি, মন্দিরবাজার, মথুরাপুর-২, মন্দিরবাজার ব্লকের বিভিন্ন এলাকাতেও কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে।