আবার কি দেশজুড়ে ফিরতে চলেছে লকডাউনের সেই দুঃসহ পরিস্থিতি! যেভাবে হু হু করে বাড়ছে কোভিড, তাতে এমনই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন দেশবাসী। আজ সকালেই এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজধানী শহর দিল্লি। তার পরে বিকেল গড়াতেই খবর মিলল, এবার ভাইরাস রুখতে লকডাউনের পথে এগোচ্ছে উত্তরপ্রদেশও।
জানা গেছে, আজ সোমবার রাত থেকে উত্তরপ্রদেশের লখনউ, প্রয়াগরাজ, বারাণসী, কানপুর, গোরখপুরে আগামী লকডাউন জারি করার কথা বলেছে হাইকোর্ট। ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে এই লকডাউন। এই ক’দিন শুধু জরুরি পরিষেবায় ছাড় দেওয়া হবে। মুদি ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে, খোলা থাকবে দুধের দোকান। হাতপাতাল বা অন্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা চলাফেরা করতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বলছে, গোটা দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রের পরেই উত্তরপ্রদেশে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে বিপজ্জনক।
দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ লকডাউনের পথে হাঁটলেও, বাংলায় এখনই লকডাউন হচ্ছে না। এমনকি নাইট কার্ফুও কোনও সমাধান নয় বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও রাজ্যে রোজই লাফিয়ে বাড়ছে কোভিড। প্রায় দশ হাজার ছুঁতে চলেছে দৈনিক সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে মানুষকে আতঙ্কিত নয়, সচেতন করার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
টানা পাঁচ দিন ধরে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখের গণ্ডি পার করছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বুলেটিন বলছে, গত পাঁচ দিনে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। দৈনিক সংক্রমণে বিশ্বের মধ্যে রেকর্ড গড়ছে দেশ। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নতুন করে কৌশল পরিবর্তন করতে হবে বলেই মনে করছেন বিশ্বেষজ্ঞরা।
কিন্তু একই সঙ্গে লকডাউন নিয়েও আতঙ্ক কম নয়। গত বছর এই লকডাউনেই প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। কেউ বাড়ি ফিরতে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন, কেউ বা রোজগার হারিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। ফলে পুরোপুরি অবরুদ্ধ পরিস্থিতি কোনওভাবেই আর কাম্য নয় দেশের একটা বড় সংখ্যক মানুষের কাছে। কিন্তু এই কোভিড ঝড়ই বা কী করে নিয়ন্ত্রণে আসবে, তা নিয়েও অন্ধকারে সকলে।