হাওড়ার ঘটনায় বড় সিদ্ধান্ত নিল আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার তো কর্মবিরতি চলেইছে। বিকেলে দলমত নির্বিশেষে আইনজীবীরা জানিয়ে দিলেন, সোমবার পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত আদালতে বন্ধ থাকবে কাজ। সোমবার বিকেলে ফের বৈঠকে বসবে বার কাউন্সিল। দেখবেন কতজন গ্রেফতার হল, তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত। যদি পদক্ষেপ সন্তোষজনক না হয়, তাহলে আরও বৃহত্তর ও দীর্ঘতর আন্দোলনে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন আইনজীবীরা। অনলাইনে টিকিটি কাটার সমস্যা দূর করতে নতুন ব্যবস্থা করল আইআরসিটিসি। অনেক সময়েই টিকিট কাটার সময়ে অনলাইন পেমেন্ট হলেও তাতে গোলমাল হয়ে যায়। টিকিট বাতিল করার ক্ষেত্রেও টাকা ফেরৎ পেতে সমস্যা হয়। এসব অভিযোগ দূর করতে আইআরসিটিসি নিজস্ব পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি করল। সংস্থার দাবি, এই নতুন গেটওয়ে ব্যবহার যেমন সুরক্ষিত তেমনই সহজ করে দেবে অনলাইনে টিকিট কাটার পদ্ধতি।
এ দিন সকালেই তিনটি মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাধাকৃষ্ণন আইনজীবীদের বলেন, তিনি রিপোর্ট চেয়েছেন। ভরা এজলাসে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমি এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছি। এক সপ্তাহ মানে এক সপ্তাহই। সোমবার সেই রিপোর্ট দেখব। তাতে যদি সন্তুষ্ট না হই, তাহলে নিজে থেকে ব্যবস্থা নেব।” আইনজীবীদের আশ্বস্ত করে বলেন, “এক্ষুণি মামলার দরকার নেই। আমি রিপোর্ট চেয়েছি। আমার উপর ভরসা রাখুন।”মামলা না হলেও, আইনজীবীরা যে ব্যাপারটাকে সহজে ছাড়বেন না তা বুঝিয়ে দিলেন টানা কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে।
আইনজীবীদের বক্তব্য, বুধবার বিকেলে বিক্ষোভরতদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ নির্বিচারে লাঠি চালিয়েছে। আদালত চত্বরে টিয়ার গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে। তাঁদের কথায়, ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থাতেও এমন দৃশ্য দেখেনি দেশ। আইনজীবীদের অভিযোগ, কোর্ট চত্বরে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে পুলিশ। যা স্বাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাসে নজিরবিহীন। মহিলা আইনজীবীদেরও বাদ দেওয়া হয়নি। এক আইনজীবী বলেন, “কোর্ট রুমে একা একজন মহিলা উকিলকে পেয়ে ১৫-১৬ জন পুলিশ মিলে যাচ্ছেতাই করেছে।”
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ। হাওড়া কর্পোরেশনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকের নতুন গেটের সামনে এক আইনজীবীর গাড়ি পার্ক করা ছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, কর্পোরেশনের অস্থায়ী কর্মীদের কেউ সেই গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এর পর খবর যায় কোর্টে। উকিলরা ঢুকে পড়েন কর্পোরেশনে। পুরকর্মীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় আইনজীবীদের। রক্তাক্ত হন বেশ কয়েক জন আইনজীবী। হাওড়ার ঘটনা যে বড় দিকে মোড় নিতে চলেছে, বুধবার রাতেই দ্য ওয়াল-এর প্রতিবেদনে তা লেখা হয়েছিল। হলও তাই।