অবশেষে বিজেপির হয়ে মাঠে নামছেন শোভন-বৈশাখী। শুক্রবার জানা গেল, সোমবার গোলপার্ক থেকে সেলিমপুর পর্যন্ত বিজেপি মিছিল করবে। তাতে যোগ দেবেন দুজনে। এর আগে বৈশাখী সোমবার অনুপস্থিতির কারণ হিসাবে শারীরিক অসুস্থতার উল্লেখ করেছিলেন। এদিন তিনি জানান, শরীর ঠিক হয়েছে। আমরা মিছিলে থাকব। এই রোড-শোয়ের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ৷
অনেকদিন ধরে চেষ্টা চলছিল৷ কিন্তু বারবার ‘তীরে এসে তরী ডুবছিল’ বিজেপি আর শোভন চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যেকার রসায়ন। আর সোমবার পৌঁছয় অন্তিম পর্যায়ে। এদিন শোভনকে নিয়ে কলকাতায় প্রথম রোড শো করার পরিকল্পনা ছিল বিজেপির। কিন্তু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় মিছিলে আসার আমন্ত্রণ না পাওয়ার অনুপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়ে দেন। এতে রীতিমতো বিড়ম্বনায় পড়েন মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়রা৷ এরপরই শোভন-বৈশাখীর বিরুদ্ধে রীতিমতো ব্যবস্থা নিতে আসরে নামে বিজেপি। জানা গিয়েছে, মুরলীধর সেন লেনে, রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে বিজেপি কার্যালয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একটি ঘর বরাদ্দ ছিল। এদিন শোভন-বৈশাখী মিছিলে না আসার পরই সেই ঘরে তালা পড়ে যায়।
ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে বৈশাখী বলেন, ‘প্রথমেই আমি সমস্ত বিজেপি কার্যকর্তাদের কাছে ক্ষমা চাইব যে কালকের মিছিলে আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। যদিও সেটা আমি আগেই নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম এবং যেতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছি।’ তিনি বলেন, ‘বিকেল তিনটের সময় ক্ষীণ চেষ্টা করেছিলাম। কোনও ভাবে যদি রেডি হয়ে বেরনো যায়। কিন্তু শোভনবাবুরও একশো মতো জ্বর ছিল সারাদিন। তা সত্ত্বেও উনি চেষ্টা করেছিলেন, ১০ মিনিটের জন্য যদি যাওয়া যায়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি।’
দেড় বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিলেও এখনও পর্যন্ত একবারের জন্যও দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেননি শোভন এবং বৈশাখী। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এলে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন দুজন। এরপরই শোভনকে কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষকের পদে বসায় বিজেপি। বৈশাখীকে করা হয় সহ-আহ্বায়ক। পদ দেওয়ার পরই শোভনকে দিয়ে বড় রোড শো করানোর পরিকল্পনা করে বিজেপি। সেই রোড শো ছিল সোমবার। কিন্তু বৈশাখীর গোঁসা, আর সেই কারণে শোভনেরও রোড শো প্রত্যাখান করা নতুন করে সংঘাতের সৃষ্টি হয়৷
বৈশাখী এদিন বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না এটা প্রথম মিছিল বা এটাই শেষ মিছিল। এর পরেও বহু মিছিল হবে। আর আমাদের তাতে পা মেলাতে দেখা যাবে। আর আমরা না থাকলে বিজেপি–র মিছিল হবে না তা কিন্তু নয়।’’
এরপর দলের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর মনোমালিন্য মেটে বলেই খবর৷ এরপরই জোরকদমে বিজেপির প্রচার সভায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নামার খবর শোনা যায়।