মরেও শান্তি নেই৷ পরিবারের দাবি মর্গ থেকে দেহ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে মুরলীধর সেন স্ট্রিটের বিজেপি অফিসে৷ অন্যদিকে পুলিশ বলছে দেহ সরাসরি যাবে নানুরে৷ এই পরিস্থিতিতে দেহ মর্গে রেখেই হাসপাতাল ছাড়ে পরিবার৷ অবশেষে সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এনআরএসের মর্গ থেকে নানুরের বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ হাইজ্যাক করে কলকাতা পুলিশ৷ এমনটাই অভিযোগ মৃতের পরিবারের৷ যদিও এই বিষয় পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
মৃতের আত্মীয় অনুপ কুমার গড়াইয়ের অভিযোগ, পরিবারের অনুমতি ছাড়াই পুলিশ এনআরএসের মর্গ থেকে দেহ হাইজ্যাক করেছে৷ এমনকি পরিবারকে না জানিয়ে রাতেই স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ নানুরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ তবে পুলিশ যেখানেই নিয়ে যাক মঙ্গলবার সকালে তারা এনআরএস হাসপাতালের যাবেন৷ সেখানকার মর্গ থেকেই দেহ বোঝে নেওয়া হবে৷
বীরভূমের নানুরে বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ সোমবার এনআরএসের মর্গে ছিল৷ সেদিন দেহ নিয়ে রাজ্য বিজেপির সদর দফতর মুরলীধর সেন লেনে যেতে চেয়েছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব৷ কিন্তু অভিযোগ, রাজ্য বিজেপিকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি৷ নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের লোকজন এবং রাজ্য বিজেপির নেতারা এলআরএস হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান৷ বিক্ষোভ ধীরে ধীরে যায় মর্গের দিকে৷ বিশাল পুলিশবাহিনী ব্যারিকেট দিয়ে মর্গ ঘিরে রাখা হয়৷
বিজেপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার, কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে পারে বিজেপি৷ এদিকে, স্বরূপ গড়াই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। ধৃত আলো চৌধুরী ও তুফান দাস এলাকারই বাসিন্দা। নানুরের মঙ্গলপুর এলাকা থেকে তল্লাশি চালিয়ে আলো এবং তুফানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৬ সেপেম্বরে নানুরের রামকৃষ্ণ গ্রামে পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে তুমুল বচসা বাধে৷ স্বরূপকে লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়৷
প্রসঙ্গত, সন্দেশখালিতে বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডল এবং সুকুমার মণ্ডলের দেহও কলকাতায় আনতে দেয়নি প্রশাসন৷ সেই ঘটনা নিয়ে পরে মুকুল রায় বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী হিসাবে নিজের দিনগুলি ভুলে গিয়েছেন৷ রাজ্য বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশকে বলেছি স্বরূপ গড়াইয়ের মৃতদেহ পার্টির হাতে তুলে দেওয়া হোক৷ পার্টি মিছিল করবে৷ বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়া হবে৷’’
বিজেপি নেতারা অভিযোগ জানিয়েছেন, বিজেপি কর্মীর দেহকে পার্টি অফিসে নিয়ে এসে শেষ শ্রদ্ধার সুযোগ দেওয়া হল না৷ প্রশাসন বারবার বলছে, মর্গ থেকে দেহ নিয়ে সোজা নানুরে ফিরে যেতে হবে৷ অন্য কোথাও যাওয়া চলবে না৷ এই অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শুধু পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধীদল থাকাকালীন জেলায় তাদের কর্মী খুন হলে বারবার কলকাতায় আনা হয়েছে৷ কিন্তু এখন আটকানো হচ্ছে কেন৷