ভোট পরবর্তী হিংসা: মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট দেখে রাজ্যকে ভর্ৎসনা কোর্টের, রশিদ মুনিরকে শো-কজ

বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দল। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে মুখবন্ধ খামে সেই রিপোর্ট জমা দেয় কমিশন। তা নিয়ে রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত।

কমিশন জানিয়েছে তাদের কোনও তথ্য দেয়নি রাজ্য সরকার। এই প্রশ্নে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, “আপনি বলেছিলেন কমিটির কাছে সমস্ত তথ্য সরবরাহ করবেন। কিন্তু আপনি তা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।”


ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কমিটির কাছে কে রিপোর্ট পেশ করেছিলেন তাঁর নাম বলুন, আমরা ব্যবস্থা নেব। জবাবে কিশোর দত্ত বলেন, আইজি আইন শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম রিপোর্ট দিয়েছিলেন।

যাদবপুরে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয়েছিল জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্য তথা ভোট পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখার কমিটির অন্যতম সদস্যকে। তা নিয়েও ক্ষুব্ধ আদালত। এই ঘটনায় ডিসিপি এস এসবি রশিদ মুনির খান কে শো-কজ করেছে বৃহত্তর বেঞ্চ।

ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাগুলিকে ক্লাব করে শুনানি করছে আদালত। তার মধ্যে যুক্ত রয়েছে মানিকতলার বিজেপি কর্মী অভিজিত্‍ সরকারকে হত্যার ঘটনাও। আদালত এদিন নির্দেশ দিয়েছে, অভিজিতের দেহর দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে হবে।

এদিন এক, দুই করে সাতটি নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দেখে নিন এক নজরে।


১. প্রত্যেকের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করতে হবে। সমস্ত ঘটনার যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত শুরু করতে হবে ।
২. ভোট পরবর্তী হিংসায় আহতদের চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতে হবে সরকারকে।
৩. মৃত অভিজিৎ সরকারের দেহ কলকাতা কমান্ড হাসপাতালে রাখতে হবে। দ্বিতীয় বার তাঁর দেহের ময়না তদন্ত করতে হবে ।
৪.যাদবপুরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদের বাধার মুখে পড়তে হলো কেন ? জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে কেন শোকজ করা হবে না তা জানাতে হবে রাজ্য সরকারকে ।
৫.আহতদের রেশনের ব্যাবস্থা করতে হবে রাজ্যকে।
৬.আর যে যে অভিযোগ বিভিন্ন কমিটি বা আহতদের বাড়ির লোক করছে তা নথিভুক্ত করতে হবে পুলিশকে।যা অভিযোগ জমা পড়েছে বা পড়ছে তা জাআতে হবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে।
৭. রাজ্যের কাছে যা তথ্য আছে তা মুখ্যসচিবের দায়িত্বে সংরক্ষণ করতে হবে।

আদালত এদিন আরও বলেছে, আরও কয়েকটি জেলার এসপি ও পুলিশ কমিশনারদের শো-কজ করা হয়। জানতে চাওয়া হয়, কেন অভিযোগ জমা নিয়ে আক্রান্তদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত বিজেপি প্রথম থেকেই বলছিল, একদিকে তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে অন্যদিকে পুলিশ তাতে প্রত্যক্ষ মদত করছে। কোথাও কোথাও পুলিশই শাসকদলের ক্যাডার হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। অনেকের মতে, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় চাপ বাড়ল রাজ্যের। আগামী ১৩ জুলাই এই মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.