কুমারগঞ্জে ১৭ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় বিজেপির মহিলা ও যুব মোর্চার প্রতিবাদ মিছিলের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
শুক্রবার শর্তসাপেক্ষে নন্দন থেকে এক্সাইড হয়ে, বিড়লা প্লানেটরিয়াম ঘুরে আবার নন্দনে এসে মিছিল শেষ করার অনুমতি দেন হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য।
পাশাপাশি, মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে, বিকেল ৩ টে থেকে সাড়ে ৪টে পর্যন্ত এই মিছিল করা যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে তরুণীকে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারি ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এবং প্রশাসনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেও শহরের রাজপথে মিছিল করতে চেয়েছিল বিজেপি মহিলা ও যুব মোর্চা। কিন্তু প্রশাসনের তরফে অনুমতি না মেলায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তারা। এদিন মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী সরজিৎ রায় চৌধুরী জানান, গত পাঁচ দিন আগে প্রমিলা বর্মণ নামে ১৭ বছরের এক তরুণীর আধপোড়া দেহ পাওয়া যায় দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ থানার অন্তর্গত সাফনগর এলাকায়।
গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটার চিহ্ন ও একটি হাত কাটা। পুলিশ জানায় ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। শিবপুরের পঞ্চগ্রামবাসী থেকে মোহাবুর মিঞা নামে একজন গ্রেফতার হলেও তারপর থেকে তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি মহিলা ও যুব মোর্চা তরফে মেয়েটির খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মিছিল করতে চেয়েছিল বিজেপি মহিলা মোর্চা কিন্তু আইন-শৃংখলার কারণ দেখিয়ে পুলিশ সেই মিছিল আটকে দেয়। তার দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা। অথচ তারপরও একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। অথচ এর প্রতিবাদে নারীর নিরাপত্তার দাবিতে মিছিল করলে, অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
তবে এ প্রসঙ্গে রাজ্যের তরফ এডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত জানান, ‘ওই রাস্তায় আগেই অন্য একটি রাজনৈতিক দলকে মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ওই একই রাস্তায় এদেরকেও অনুমতি দিলে আইন-শৃংখলার অবনতি হতে পারে।’
বাংলার বুদ্ধিজীবী মহল নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অভিনেত্রী রিমঝিম মিত্র এর পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বনির্ধারিত রাস্তা বদলে নন্দন থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি চান মামলাকারীর আইনজীবীরা।
তাদের বক্তব্য, এই মিছিলে চারশো থেকে পাঁচশো জন কর্মী-সমর্থকরা থাকবেন তাহলে পুলিশের নিরাপত্তা দিতে অসুবিধা কোথায়? তবে সেখানেও আপত্তি দেখায় রাজ্য। কারণ অন্য একটি মিছিল আছে যা ধর্মতলা থেকে গান্ধীমূর্তি গিয়ে শেষ হবে। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চান কোথায় মিছিল হলে রাজ্যের আপত্তি নেই? অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, নন্দন থেকে এক্সাইড মোড় ঘুরে, বিড়লা প্লানেটরিয়াম হয়ে আবার নন্দনে এসে শেষ করার অনুমতি দিতে পারে রাজ্য। রাজ্যের প্রস্তাবিত রাস্তায় মিছিলে সম্মতি জানায় মামলাকারীর আইনজীবীরা।