হুমকির সুর শোনা গিয়েছিল গত অক্টোবরেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের ঠিক আগের দিন অবৈধ বালি খাদানের বৈধ অনুমতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি তরুণ থাপা। এমনকি দাবি পূরণ না হলে ফের জঙ্গি শিবিরে ফিরে যেতে পারেন তিনি। এবার সেই পথে আরও কয়েকজন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি। এর মধ্যে দোলাচলে রয়েছেন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিরা। চটজলদি চাকরি না পেলে ফের জঙ্গি শিবিরে ফিরে যাওয়ার হুমকি দিলেন তাঁরা।
সোমবার চাকরির দাবিতে পুলিশ সুপারের অফিসে বিক্ষোভ দেখান প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি ও লিঙ্ক ম্যানেরা। দু’ মাসের মধ্যে চাকরি না দিলে ফের জঙ্গি শিবিরে ফিরে যাওয়ার হুমকি দিলেন তাঁরা। এদিকে কেএলও জঙ্গি জীবন সিংহকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার আহ্বান জানালেন প্রাক্তন নেতা জ্যোৎস্না রায়।
মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে হোম গার্ড পদে চাকরির আবেদন করেছিলেন প্রায় আট শতাধিক প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি ও লিঙ্ক ম্যানেরা। এদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জনের চাকরি হয়েছে। কিন্তু বাকি ৪৪২ জনের এখনও চাকরি হয়নি। আর এতেই ক্ষুব্ধ প্রাক্তন জঙ্গিরা।
তাঁদের অভিযোগ, গত কয়েকমাস ধরে সরকারের বিভিন্ন দফতরে দফায় দফায় আবেদন করেছেন। এঁদের মধ্যে কিছু লোকের চাকরি হয়েছে। কিন্তু বাকি ৪৪২ জনের চাকরির ব্যাপারে বারবার আশ্বাস পেলেও এখনও পর্যন্ত তাঁদের চাকরি হয়নি। তাই এবার জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে তাঁরা দু’ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিলেন।
আর এ নিয়ে প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি জ্যোৎস্না রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে আমরা চাকরির আবেদন করেছি। আমাদের ৪০০ জনের চাকরি হয়েছে। কিন্তু বাকি ৪৪২ জনের চাকরি এখনও কাজ হয়নি। সরকারের বিভিন্ন দফতরে বারবার আবেদন করছি। কিন্তু এখনও চাকরি পেলাম না। আমাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ২০- ২৫ টি করে মামলা দেওয়া আছে। সেই মামলার খরচ চালাতে গিয়ে আজ আমরা ফকির। আমরা এর আগেও এসেছিলাম। তখন আমাদের একমাস পরে এস পি অফিসে আসতে বলা হয়৷ কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও আমাদের চাকরি হয়নি। তাই আমরা দু’ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিলাম। এর মধ্যে যদি চাকরি না হয় তবে আমরা ফের জঙ্গী শিবিরে ফিরে যাব।”
তিনি যোগ করেন, “এছাড়া আমাদের কাছে আর কোনও পথ নেই”। তিনি আরও বলেন, “জীবন সিংহ একজন বিপ্লবী। সরকার যদি আলোচনার মাধ্যমে তাঁর দাবি মেনে নেয় তবে আমি অবশ্যই চাই উনি মূল স্রোতে ফিরে আসুন।”
এদিকে জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, “আমরা ওঁনাদের দাবি শুনলাম। এঁদের কিছু লোকের চাকরি হয়েছে। বাকিদের সরকারি নিয়ম মেনে নিশ্চয়ই হবে।”